ঢাকা, রবিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জুন ২০২৪, ২২ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

তবুও গামিনিকেই আগলে রাখছে বিসিবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৮
তবুও গামিনিকেই আগলে রাখছে বিসিবি বিসিবি’র লঙ্কান পিচ কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা (ক্যাপ পরা)

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে স্বাগতিকরা যে উইকেট চেয়েছিল তা পায়নি। বরং হয়েছে উল্টো! ম্যাচে সফরকারী লঙ্কানদের শারীরিক ভাষা ও পারফরম্যান্স দেখে মনে হয়েছে, নিজেদের কন্ডিশনেই খেলছিল দিনেশ চান্দিমাল ও তার দল। উইকেটটি যেন তাদের জন্যই প্রস্তুত করেছেন বিসিবি’র লঙ্কান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা!

আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি এমন, লঙ্কান টিম ম্যানেজমেন্ট গামিনিকে যেভাবে উইকেট প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছে সেভাবেই তিনি তা করেছেন। আর তারা একাদশও সাজিয়েছে পিচ মোতাবেক।

ফলে চূড়ান্ত ফলাফল তাদের পক্ষেই গিয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, উইকেট থেকে ঠিক এই সুবিধাটিই স্বাগতিক দেশ পেয়ে থাকে। কিন্ত হায় কিউরেটর যে লঙ্কান!

সন্দেহের বাষ্প তাই ম্যাচের ফলাফলের পর থকেই উ‍ড়তে শুরু করেছে। পরে তা ঘূর্ণিভূত হতে শুরু করেছে যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেল, ফাইনাল ম্যাচের আগের দিন লঙ্কান টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একাডেমি ভবনে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক সভা করেছেন গামিনি। শুধু তাই নয়, ম্যাচের আগের দিন তিনি উইকেটে পানিও দিয়েছেন যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো বিসিবি’র উর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা এই ব্যাপারগুলোকে হয়তো ওতটা গুরুত্বসহকারে নেননি। বরং খেলায় হার জিত থাকে, তারা ওই চিরন্তন বিষয়টিকেই আ‍ঁকড়ে বসে আছেন। আর সত্যিই যদি উইকেট নিয়ে এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই বিসিবি জানে বলে জানালেন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।

‘ম্যাচের রেজাল্ট যখন ভালো হয় তখন কিন্তু আর এসব বিষয় নিয়ে কোনো কথা থাকে না। কিন্তু রেজাল্ট যখন কাঙ্খিত না হয় তখন বিভিন্ন রকমের আলোচনা আসে। তো আমি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় আলোচনা করব না কথা বলবো না। যদি এই ধরনের কোন বিষয় আমাদের চোখে পড়ে অবশ্যই বোর্ড সেটা দেখে। প্রত্যেকটা বিষয় কিন্তু আমাদের মাথায় আছে। এটা আমাদের মতো করে ইন্টারনালি দেখি। ’

অবশ্য সেটা দেখা উচিত এবং শুরু থেকেই আরও ভালো করে দেখা উচিত ছিল। কেননা ফাইনাল ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসেই বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন তারা এই উইকেট চাননি।

‘অবশ্যই আমরা ভালো উইকেট চেয়েছিলাম। শুরু থেকেই বলেছি, প্রথম ম্যাচ থেকেই চেয়েছি, হাই-স্কোরিং উইকেটে ব্যাটিং করতে চাই। বোলিংয়ে আমাদের চারজন পেসার আছে, সাকিব ছিল। নাসির খেলেছে, মিরাজ খেলেছে। আমাদের বোলিং ইউনিট শক্তিশালিই ছিল। আমরা সব সময় চেয়েছি ভালো উইকেটে খেলতে। একটা ম্যাচ কেবল শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তিনশ’ করেছিলাম। প্রতি ম্যাচেই অন্তত ২৭০-৮০, তিনশ রানের উইকেটে খেলতে চেয়েছি আমরা। ’

তারপরেও যখন এমন উইকেট হলো তখন তো বলতেই হয় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েই এমন উইকেট প্রস্তুত করেছিলেন গামিনি ডি সিলভা। নাকি অন্য কিছু। বিসিবি তাহলে সেটা তদন্ত করে জনসমক্ষে নিয়ে আসুক!

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২২১ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। উইকেটের কন্ডিশনে লো-স্কোরিং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচেরই আভাস মিলেছিল। দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের! ফিল্ডিংয়ের সময় হাতে চোট পেয়ে ছিটকে যান সাকিব আল হাসান। ব্যাটিংয়ে নামা হয়নি তার। যার চড়া মূল্য দিতে হয়েছে দলকে। ২২২ রানের টার্গেটে নেমে ৭৯ রানে হার মানে মাশরাফির দল। বৃথাই যায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৭৬ রানের লড়াকু ইনিংস।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৮
এইচএল/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।