গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে তাই সাকিবের অনুপস্থিতি দলের জন্য অনেক বড় ক্ষতি বলেও মত বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়কের। ‘সিরিজে সাকিব না থাকাটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় ক্ষতি।
সাকিব! সে তো একের ভেতরে তিন। হয়তো বা তারও বেশি। কিন্তু থেকেও তিনি নেই। ব্যাট হাতে তামিম, মুশফিক ফর্মে থাকলেও সাদা পোশাকে ফর্মহীনতায় ইমরুল কায়েস। তার সবশেষ টেস্ট সেঞ্চুরি ২০১৪ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের সাথে। শেষ দশ ম্যাচে যার সর্বোচ্চ রান ৩৪।
আরেক টপ অর্ডার লিটন দাস, যিনি নিজের খেয়াল খুশিমত খেলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। ৬ টেস্টে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৭০।
টপ অর্ডারের মুমিনুল হক অবশ্য রানেই আছেন। সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তার ব্যাট থেকে ৭৭ রান এসেছে। মিডল অর্ডারের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দ.আফ্রিকায় দুই টেস্টে ৬৬ রানের একটি ইনিংস খেললেও এর আগে খেলা ১০ ম্যাচে তার ব্যক্তিগত ৬৭। যা এসেছিল সেই কবে! ২০১৫ সালে সফরকারী দ. আফ্রিকার বিপক্ষে। এর বাইরে কোনো ম্যাচেই তিনি ৪০ রানের কোঠাও স্পর্শ করতে পারেননি।
বাকি যারা আছেন মোসাদ্দেক, মিরাজ, তাদের শুরুটা মাত্রই হয়েছে বিধায় প্রত্যাশাটাও কম।
অর্থাৎ সাকুল্যে তিন ব্যাটসম্যান। ঠিক এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে প্রথম ম্যাচটি খেলতে হবে স্বাগতিকদের। যেখানে ভালো কিছু করতে হলে অবশ্যই সিনিয়রদের এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সাগরিকায় লঙ্কাবধের কাজটি কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে বিশ্বাস করেন সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আশরাফুল।
‘টেস্ট সিরিজটা কঠিন হবে। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনা থাকলেও পারেনি। কিন্তু টেস্টে ওদের সাম্প্রতিক রেকর্ড খুব ভালো। আপনি দেখেন যে ভারতে গিয়ে তাদের সাথে দুটি টেস্ট ড্র করেছে। পাকিস্তানের সাথে ২-০তে জিতেছে। তো সিরিজটা কঠিন হবে। ভালো করতে হলে অবশ্যই সিনিয়রদের দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। ’
আর এই ক্ষেত্রে ওপেনার তামিম ইকবালের ভূমিকাটিই বড় করে দেখছেন টাইগারদের সাবেক এই দলপতি। ‘স্পিন উইকেটে খেলে আমাদের ব্যাটসম্যনরা অভ্যস্ত নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন উইকেটে কখনো অনুশীলনও করি না। এই উইকেটে যারাই সেট হয় তারা যেন লম্বা সময় খেলতে পারে। বিশেষ করে তামিমের ওপরে চাপটা বেশি থাকবে। কারণ তামিম ফর্মে আছে এবং অভিজ্ঞ। ও যদি উইকেটে থাকতে পারে তাহলে হাথুরুসিংহের টেনশন থাকবে। আর ও আউট হয়ে গেলে আমাদের দলটা মানসিকভাবে ডাউন হয়ে যায়। ’
তবে সব কিছুর পরেও লঙ্কান কোচ হাথুরুসিংহেকে মাথায় রাখতে বললেন আশরাফুল। কারণটিও সঙ্গত। সদ্য শেষ হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরু থেকে ধুঁকতে থাকা দলটিকেই এমন দাপুটে ফেরানোর কৃতিত্ব অবশ্যই তার। ‘হাথুরুসিংহে আমাদের সাথে সাড়ে তিন বছর থেকে সে আমাদের খুঁটিনাটি সব কিছু জানে এবং তার প্রমাণও আমরা পেয়েছি। ট্রাইনেশনে প্রথম দুইটা ম্যাচ হারার পরও ভঙ্গুর দলটিকে নিয়ে যেভাবে ফিরলো। সেটা কিন্তু ভাবনার বিষয়। দুই টেস্টেই তাই আমাদের অলআউট করতে হবে। ’
শ্রীলঙ্কার সাথে এই পর্যন্ত ১৮টি টেস্ট খেলে মাত্র ১টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান বাংলাদেশের বিপক্ষে। কিন্তু সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স কিন্তু তাদের পক্ষেই বলছে। গেল বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে তাদের বিপক্ষেই শততম টেস্ট জিতে সিরিজ ড্র করেছিল সফরকারী বাংলাদেশ। তাছাড়া ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের পর, অস্ট্রেলিয়াকে হারানেরার তরতাজা স্মৃতিতো আছেই।
তার ওপরে আছে লাকি ভেন্যু সাগরিকা। যেখানে ১৬ টেস্টের ৫টিতে ড্র করেছে স্বাগতিকরা। আর ১টিতে এসেছে জয়। আরেকটি জয়ের স্বপ্নতো দেখাই যায়। কিন্তু সাকিব যে নেই!
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮
এইচএল/এমএমএস