একটা টেস্ট কতটা নাটক নিয়ে হাজির হতে পারে আয়ারল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্ট তার বড় উদাহরণ। আইরিশদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম টেস্ট তাও ১৯৫২ সাল থেকে টেস্ট ক্রিকেটের মাঠ মাড়ানো পাকিস্তানের বিপক্ষে।
ডাবলিনে ১১ মে অভিষিক্ত আয়ারল্যান্ডের জন্য প্রথম দিনটা ছিল বৃষ্টি থামার প্রতীক্ষা। সেদিন আর বল মাঠেই গড়ালো না। পরের দিন ব্যাট করতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা দেন পাক অধিনায়ক সরফরাজ।
পাকিস্তানের মতো অভিজ্ঞ টেস্ট দলের জন্য এই রান খুব একটা বড় স্কোর নয়। তবু হয়তো অভিষিক্ত একটা দলের কাছে অল-আউট লজ্জা পাওয়ার হাত থেকে বাঁচতেই ৯ উইকেট হারানোর পর খুব বেশি দেরি না করে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান।
টেস্টে প্রথমবারের মতো ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় আইরিশরা। পাকিস্তানের তিন বিধ্বংসী বোলার মোহাম্মদ আব্বাস (৪ উইকেট), শাদাব খান (৩ উইকেট) এবং মোহাম্মদ আমিরের (২ উইকেট) বোলিং তোপে ১৩০ রানে অল-আউট হয়ে ফলোঅনের খাঁড়ায় পড়েন উইলসনরা।
তবে ফলোঅন করতে নেমেই হয়তো নিজেদের টেস্ট অভিষেকের নার্ভাসনেস কাটিয়ে ওঠেন আইরিশ ব্যাটসম্যানরা। উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডদের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প শুরু এখান থেকেই।
এড জয়েস (৪৩) আর অধিনায়ক পোর্টারফিল্ডের (৩২) ওপেনিং জুটি মূল ভিত্তিটা গড়ে দেয়ার পর বুড়ো কেভিন ও’ব্রায়েনের সেঞ্চুরির (১১৮) ওপর ভর করে ৩৩৯ রান করে আয়ারল্যান্ড। সেই সাথে ১৬০ রানের লিডও পায় দলটি।
আইরিশদের সামনে অপেক্ষা করছিলো অভিষেকেই জয়ের হাতছানি। কিন্তু অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। নতুবা মাত্র ১৪ রানেই পাকিস্তানের ৩ উইকেট ফেলে দিয়ে নতুন ইতিহাস গড়ার পথেই ছিলো টেস্ট ক্রিকেটের নবীনতম সদস্যরা।
সেটা সম্ভব হলো না এই টেস্টেই অভিষিক্ত সাবেক পাক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হকের ভাতিজা ইমাম-উল-হক (৭৪) আর বাবর আজমের (৫৯) কারণে।
শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়লো অভিষেকেই দুর্দান্ত টেস্ট দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়া আয়ারল্যান্ড। তবে একটা অর্জন ঠিকই নিজেদের খাতায় তুলেছে দলটি। অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার জিতেছেন কেভিন ও’ব্রায়েন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ৩১০/৯ ডিক্লেয়ার, ১৬০/৫
আয়ারল্যান্ড: ১৩০/১০, ৩৩৯/১০
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কেভিন ও’ব্রায়েন
বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
এমএইচএম/এমজেএফ