মঙ্গলবার (৫ জুন) সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই নামবেন রশিদ-নবীরা।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দলের বোলিং শুরুতে বেশ নিয়ন্ত্রিত থাকলেও শেষের দিকে ধ্বস নামে। মূলত পেসারদের হাতে সাকিবের বল তুলে দেয়াটাই বুমেরাং হয়ে উঠে। শেষ ৫ ওভারে ৭১ রান তুলে ফেলে আফগানিস্তান। অথচ বল হাতে কাল মোসাদ্দেক হোসেন মাত্র ১ ওভারে ৩ রান দিয়েছিলেন।
আর সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ১ ওভার বল করে মাত্র ১ রান খরচে ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। তারপরও এই দুজনের হাতে আর বলই তুলে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। পেসারদের উপর চড়াও হয়ে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় আফগানিস্তান। মাহমুদুল্লাহকে কেন আর বোলিংয়ে আনা হলো না, সেটাই এক বিরাট প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সামনে বিশ্বরেকর্ড গড়ার সুযোগ ছিল। আর মাত্র ২ উইকেট নিতে পারলেই হয়ে যেতেন সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৫০০ উইকেট ও ১০০০০ রান করা তৃতীয় ক্রিকেটার। কিন্তু তিনি নিতে সক্ষম হয়েছিলেন মাত্র ১ উইকেট। ১২তম ওভারে বল করতে নেমে প্রতিপক্ষের ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদের উইকেট নেন তিনি। এরপর আর কোন উইকেট না পাওয়ায় আরও এক ম্যাচ অপেক্ষায় থাকতে হবে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারকে।
অন্যদিকে ব্যাট হাতে কাল বাংলাদেশের সবাই নিজেদের ছায়া হয়েই ছিলেন। ওপেনার তামিম ইকবাল আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের বলে যেভাবে আউট হলেন তা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারানোর প্রথম ঘটনা এটি।
আরেক ওপেনার লিটন দাসের ২০ বলে ৩০ রানের ইনিংসও কার্যকর প্রতীয়মান হয়নি। অধিনায়ক সাকিবও ১৫ বলে ১৫ রান করে যেভাবে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হয়েছেন তাকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলাটা অত্যুক্তি হবে না।
রশিদের বলে মুশফিকের আউটই মূলত খেলা থেকে পুরোপুরি ছিটকে ফেলে বাংলাদেশকে। পরের বলেই রশিদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরা সাব্বির তার বাজে ফর্ম থেকে ফিরবেন এই আশা এখন দুরাশায় নিমজ্জিত। এক মাহমুদুল্লাহ আর কতো সামাল দেবেন? তিনি পারেনও নি। পরের ম্যাচে সাব্বিরের স্থলে অন্য কেউ নামবেন কি না তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু স্কোয়াডে বিকল্প আর কেইবা আছে? বল হাতেও তরুণদের উপর ভরসা করে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
প্রথম ম্যাচে মূলত আফগানদের প্যাশনের কাছেই হেরেছে বাংলাদেশ। ভয়ডরহীন ক্রিকেট কি জিনিস তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন রশিদ-জাদরানরা। পরিস্থিতি মেপে বোলিং পরিবর্তন আর স্পিনে ভরসাই মূলত পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। উল্টো দিকে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাউকেই দেখা যায়নি খুনে ভঙ্গিতে। জয়ের জন্য যে প্রয়াস সেটাই অনুপস্থিত ছিল বাংলাদেশ দলে।
রশিদের তিন ওভারই বাংলাদেশের বিপদে নিমজ্জিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল। ১৯ বছর বয়সী রশিদ টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সময়ে ৫০ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়েছেন। ১৩ রানে তার ৩ উইকেট নেয়া রশিদ আর মুজিব উর রহমান পরের ম্যাচেও রহস্য হয়েই থাকবেন নাকি রহস্যভেদ করবে টাইগাররা সেটাই দেখার বিষয়।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলে আসতে পারে কিছু পরিবর্তন। দলে মোসাদ্দেক হোসেনের জায়গায় সৌম্য সরকার, আবুল হোসেনের জায়গায় মেহেদি হাসান মিরাজ এবং আবু হায়দারের স্থলে আসতে পারেন আবু জায়েদ।
বাংলাদেশ দলের সম্ভাব্য একাদশঃ
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদুল্লাহ, সাব্বির রহমান, সৌম্য/মোসাদ্দেক হোসেন, আবুল হোসেন/মেহেদি হাসান মিরাজ, আবু জায়েদ, রুবেল হোসেন, নাজমুল ইসলাম।
আফগানিস্তান দলের সম্ভাব্য একাদশঃ
আজগর স্ট্যানিকজাই (অধিনায়ক), উসমান গণি, মোহাম্মদ শাহজাদ (উইকেটরক্ষক), মুজিব উর রহমান, নাজিবুল্লাহ জাদরান, শফিকুল্লাহ শাদাক, মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি, করিম জানাত, শাপুর জাদরান।
বাংলাদেশ সময়ঃ ২০৩০ ঘন্টা, জুন ০৪, ২০১৮
এমএইচএম