অবশেষে সেই যুগের শুরু হতে যাচ্ছে। বুধবার (৪ জুলাই) নর্থ সাউন্ডে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকে সাকিব যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।
অনেকেই হয়েতা জানেন তারপরেও মনে করিয়ে দিচ্ছি। ২০০৯ সালে লাল সবুজের ক্রিকেটে দায়িত্ব নিয়ে প্রায় দুই বছর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন সাকিব। দু’ বছর যেতে না যেতেই (২০১১) জিম্বাবুয়ে সফরে দলীয় ব্যর্থতা আর শৃঙ্খলাভঙ্গের জের ধরে নেতৃত্ব হারান বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তখন অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটের আলাদা আলাদা অধিনায়কের যুগ শুরু হয়নি।
সে পুরোনো কথা। এবার আসা যাক মূল আলোচনায়। ডিসেম্বরে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া সাকিব দলকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন চলতি বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা সিরিজেই। কিন্তু ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাঁহাতের কনিষ্ঠায় চোট পেলে ব্যাটন হাতে তার মাঠে নামা ব্যহত হয়। ফলে এই সিরিজ পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতেই হয়েছে।
এবার দেখার পালা দলকে তিনি কতটা নৈপুণ্যের সাথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হন। এই ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ অবশ্য নেয়াহাত কম নয়। একে তো টেস্ট ক্রিকেট। তার ওপরে আবার বিদেশের মাটিতে এবং পেস কন্ডিশনে। মানে সব কিছুই তাদের প্রতিকূলে।
কিন্তু সত্যিকারের অধিনায়ক তো তিনিই যিনিই সকল প্রতিকূলতা জয় করতে পারেন। যদিও পরিসংখ্যান বলছে ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত সময়ে তার অধীনে খেলা বাংলাদেশ ৯ টেস্টের ৮টিতেই হেরেছিলো।
সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বের পাশাপাশি টাইগার শিবিরে আরও একজন আছেন যার হাত ধরে এই সিরিজ দিয়েই শুরু হবে লাল সবুজের ক্রিকেটের নতুন পথ চলা। তিনি হেড কোচ স্টিভ রোডস।
গেল বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মাঝামাঝি চন্ডিকা হাথুরুসিংহে টাইগারদের হেড কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর প্রায় ৮ মাস খোঁজাখুঁজির পর গেল জুনের প্রথম সপ্তাহে কোচ হিসেবে রোডসকে নিয়োগ দেয়া হয়। সাকিবদের দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই এই ব্রিটিশ কোচের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট।
ক্যারিবীয়রা সম্প্রতি ঘরের মাঠে নিজেদের শেষ টেস্ট সিরিজে শুরুটা ভালো করলেও, তা ধরে রাখতে পারেনি। তরুণ শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজে জয় দিয়ে শুরু। দ্বিতীয় টেস্টে ড্র, আর শেষ ম্যাচে তো হেরেই গেল। ফলে এখান থেকেই ভালো কিছু করে দেখানোর উপায় বের করতে হবে তামিম-সাকিবদের।
পরিসংখ্যান অবশ্য বলছে ভিন্ন কিছু। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত টাইগারদের খেলা ১২ টেস্টে ক্যারিবীয়রাই এগিয়ে। ৮ ম্যাচে জয় উইন্ডিজদের। বাকি ৪ ম্যাচের ২টিতে বাংলাদেশ জিতেছে। এই ২টি অবশ্য ২০০৯ সালে ক্যারিবীয়দের মাটিতেই। তবে সেবার মূল সারির দল বেতন-ভাতার কারণে সিরিজ বয়কট করলে, দ্বিতীয়সারির দলের বিপক্ষেই সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। কিন্তু ২০১০ সালে চট্টগ্রাম ও ২০০৪ সালে গ্রস ইসলেটে অন্য দুটি টেস্টে দারুণ খেলে ড্র করেছিলেন টাইগাররা। বিশেষ করে গ্রস ইসলেটে ব্রায়ান লারাদের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় ড্র আজও দাগ কাটে সমর্থকদের মনে।
সাদা পোশাকে সাকিবের নেতৃত্ব আর নতুন হেড কোচ স্টিভ রোডস। এই দুই নতুনের সমন্বয়ে নতুন যুগের শুরুটা টাইগাররা কেমন করে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা?
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ০৩ জুলাই, ২০১৮
এইচএল/এমএমএস