ক্রিকেট সমর্থকরা অভিভূত হয়ে দেখেছেন তামিমের সাহসী ও প্রশংসনীয় সেই সিদ্ধান্ত। ৪৭তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান রানআউট হওয়ার সবাই যখন ভেবে নেয় বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ, ঠিক সে সময় স্লিং থেকে ঝোলানো হাত খুলে ব্যাট হাতে নেমে যান বাংলাদেশের তারকা ব্যাটসম্যান তামিম।
কী চলছিল তখন তামিমের মনে, কী ভাবছিলেন, কেন এমন সিদ্ধান্ত- এসব নিয়েই কথা বলেন ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকইনফোর’ সঙ্গে। মূল সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো:
‘বোলার যখন আমার দিকে দৌড়ে আসছিল ওই ১০ সেকেন্ডে আমি খুব সাহস পাচ্ছিলাম। মাঠে নামার সময় দর্শকদের প্রতিটি চিৎকার আমাকে সাহস যোগাচ্ছিল। আমি হয়তো আউট হয়ে যেতে পারতাম বা যেকোনো কিছুই হতে পারতো, তবে ওই মুহূর্তে আমি দল এবং দেশের জন্য পুরোপুরি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম। ’
‘এখন মনে হচ্ছে খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল কাজটা। আঘাত পাওয়া হাতটা আমার পেছনে ছিল কিন্তু যদি খেয়াল করে থাকেন, শট খেলার সময় ওই হাত সামনে চলে আসে আর বলটি মিস করলেই আমার ওই হাতেই আবার লাগতো। ’
‘মাশরাফি ভাই যখন আমাকে নামতে বললেন, আমি ভেবেছিলাম তিনি মজা করছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটা আমার ছিল। ভাবনা ছিল আমি নন স্ট্রাইকে থাকবো। কিন্তু সেটা হলো না। ’
‘রুবেল যখন ক্রিজে ছিল আমি তখন প্যাড আপ করা শুরু করি। মাশরাফি ভাই আমার গ্লাভস কেটে দেন। জীবনে প্রথম অন্য কেউ আমাকে গার্ড পরিয়ে দিয়েছে! মুমিনুল এবং অন্যরা আমাকে প্যাড পরতে সাহায্য করে। সবাই আমাকে তখন দারুণ সহায়তা করছিল, সাহস দিচ্ছিলো। ’
‘যখন মোস্তাফিজ আউট হলো, তখন পর্যন্তও নিশ্চিত ছিলাম না নামবো কি-না। আমি কিছু চিন্তা না করেই নেমে পড়লাম। আমাকে জিজ্ঞেস করা হয় আমি নিশ্চিত কিনা, আমি দ্বিধাহীন ছিলাম। ’
‘স্টেডিয়ামে দর্শকদের চিৎকারে আমি সাহস পাচ্ছিলাম। এই এশিয়া কাপ নিয়ে আমার অনেক উচ্চাশা ছিল এবং আমি ওই মুহূর্তে আবেগের বশেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল যদি আমি এক বল খেললে দল আরও ৫ কিংবা ১০ রান আসে এবং সেটা দলের উপকারে আসে, তাহলে কেন নয়? কেউ হয়তো আশা করেনি যে আমি ১ বল খেললে অপর প্রান্ত থেকে ৩২ রান আসবে। মুশফিক অসাধারণভাবে শেষ দিকটা সামলেছে। ’
‘আমার মনে হয় না আমার জীবনে এমন দারুণ অভিজ্ঞতা আগে হয়েছে। এখন আমি সবার প্রতিক্রিয়া দেখছি, কিন্তু আমি যখন ব্যাট করতে নামছিলাম এসব কোনো কিছুই তখন আমার মাথায় ছিল না। আমি শুধু আমার দল এবং দেশের কথা ভেবে নেমেছিলাম। ’
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮
এমকেএম