১৭৪ রানের মামুলি রান তাড়ায় মোটেই তাড়াহুড়ো করেন নি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ওপেনিং জুটিতেই ৬১ রান যোগ করেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শেখর ধাওয়ান।
ভারতের ইনিংসের ২৪তম ওভারের শেষ বলে আম্বাতি রাইডুকে (১৩) উইকেটরক্ষক মুশফিকের ক্যাচের পরিণত করেন পেসার রুবেল হোসেন। ১০৬ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে ভারতের। এরপর ৩৭ বলে ৩৩ রান করা মহেন্দ্র সিং ধোনিকে মোহাম্মদ মিথুনের ক্যাচে পরিণত করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। কিন্তু ততক্ষণে জয়ের একদম কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ভারত (১৭০ রান)।
বাকি পথ সহজেই পাড়ি দেন রোহিত শর্মা। ১০৪ বল খেলে ৫ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় সাজানো ৮৩ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে ৩৬.২ ওভারেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক।
শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের বোলিং তোপে মাত্র ১৭৩ রানেই থামে টাইগারদের ইনিংস।
ব্যাটিং করতে নেমে স্কোর বোর্ডে মাত্র ১৬ রান যোগ করতেই দুই উকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বর কুমারের বাউন্সারে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন বাংলাদেশের ওপেনিং ব্যাটসম্যান লিটন দাস। মারার বলই দিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। ফাঁদে পা দিয়ে হাঁকাতে গিয়েই ক্যাচ তুলেছিলেন লিটন। ডিপ ব্যাকওয়ার্ডে থাকা ফিল্ডার কেদার যাদব দৌড়ে এসে দারুণ এক ক্যাচ নিলে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
লিটন দাসের বিদায়ের চার বল পরেই ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই বুমরাহ’র বলে স্লিপে থাকা শিখর ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন বাংলাদেশের আরেক ওপেনার নাজমুল হাসান শান্ত। ১২ বলে ১৬ রান করে ভারতীয় স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার বলে শেখর ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে তৃতীয় উইকেট হিসেবে বিদায় নেন সাকিব আল হাসান।
দলীয় ৬০ রানে জাদেজার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিথুন (৯)। ৫ রান যোগ হতেই জাদেজার তৃতীয় শিকারে পরিণত হন দলের মূল ভরসা মুশফিকুর রহিম (২১)। কিছুক্ষণ লড়াই করে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ (২৫)। যদিও ভুবনেশ্বর কুমারের করা বল তার ব্যাটের কানায় লেগেছিল। কিন্তু আম্পায়ার তাকে লেগ বিফোর আউটের ঘোষণা দেন। রিভিও না থাকায় কোনো উপায় ছিল না তার।
ব্যাট হাতে যা কিছু লড়াই তা করে দেখালেন স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। ৫০ বলে ২ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় তার ৪২ রান আর অধিনায়ক মাশরাফির (৩২ বলে ২ ছক্কায় ২৬ রান) সঙ্গে তার ৬৬ রানের জুটির বদৌলতেই সব উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। মূলত বড় কোনো জুটি না গড়তে পারার খেসারত দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
কিন্তু এত কম রান ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের থামানোর জন্য যথেষ্ট প্রতীয়মান হয়নি। রোহিত, ধাওয়ান আর ধোনির ব্যাটে চড়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।
বল হাতে ১০ ওভারে ২৯ খরচে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ভারতের বাঁহাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা। মূলত বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বনাশ এই স্পিনারই করেছেন। তবে দুই পেসার জসপ্রিত বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর কুমারও ৩ উইকেট করে তুলে নিয়ে রেখেছেন বড় ভূমিকা।
এশিয়া কাপে টানা দুই ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ভুগিয়েছে টাইগারদের। বিশেষ করে প্রথম ম্যাচে তামিমের ইনজুরিতে পড়ার পর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা যেন দিবালোকের মতো পরিষ্কার। টপ অর্ডারের ব্যর্থতা কাটাতে এশিয়া কাপের মাঝপথে দলের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস।
আগামী রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) আবুধাবিতে সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৮
এমএইচএম