বর্তমানে একটি বাড়ি ও একটি খামার প্রকল্পের মাঠ সহকারী হিসেবে কর্মরত মিনতি রানীর আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক ঘটে ২০১৮ সালে, সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত ২য় বিভাগ ক্রিকেট লীগে। আম্পায়ারিং করছেন বর্তমানে চলমান সিবি ডায়াগনস্টিক ২য় বিভাগ ক্রিকেট লিগেও।
একান্তে আলাপকালে তিনি জানান, ছোট বেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ ছিল তার। স্কুল পর্যায়ে সকল খেলায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি। এরপর দেবহাটার আকছার আলীর অধীনে তার ক্রীড়া জীবনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। প্রথমে ফুটবলে নাম লেখান তিনি। সেসময় নানা বাধার সম্মুখীন হন মিনতি। ১৯৯৭ সালে দেবহাটার বড় শান্তার সুফল মন্ডলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এই নারী। স্বামীর অনুপ্রেরণায় আবারো খেলায় ফেরেন মিনতি। ফুটবল ছেড়ে এবার জেলা ক্রিকেট কোচ মফাসিনুল ইসলামের তালিমে ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার। মূলত অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি। পেস বোলিং করতেন। জেলা নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে তার নেতৃত্বে সাতক্ষীরা জেলা নারী দল পিরোজপুর নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সুনাম বয়ে আনে। ২০১০ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৫ রান দিয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেছিলেন দেবহাটার এই পেসার।
খেলার মাঝে থেকেও তিনি সংসার ও চাকরি করে গেছেন সমান তালে। সেই সময় বেসরকারি সংস্থা আইডিয়াল’র মাঠ কর্মী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। সংস্থার পরিচালক ডা. নজরুল ইসলামও তার খেলায় উৎসাহ দিতেন। ক্রিকেট ম্যাচ থাকলে তাকে ছুটির ব্যবস্থা করে দিতেন তিনি। খেলোয়াড়ি জীবন শেষ, এখন নতুন সংগ্রামে নেমেছেন মিনতি রানী।
আম্পায়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এখন স্বপ্ন দেখছেন জাতীয় পর্যায়ে ম্যাচ পরিচালনার।
বাংলানিউজকে মিনতি জানান, ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নারীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম আম্পায়ার কর্মশালায় খুলনা বিভাগের হয়ে অংশ নেন তিনি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত ২য় বিভাগ ক্রিকেট লিগে (পুরুষ) আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক হয় তার। এরপর থেকে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত স্কুল পর্যায়ের ও ২য় বিভাগ ক্রিকেট লিগে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) সিবি ডায়াগনস্টিক ২য় বিভাগ ক্রিকেট লিগে পলাশপোল ট্রেনিং ক্লাব ও গাভা ক্রীড়া সংস্থার মধ্যকার ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন মিনতি রায়। এই ম্যাচে তার সহকর্মী ছিলেন সঞ্জীব ব্যানার্জী।
পারিবারিক জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের মা মিনতি রায় বলেন, আগামীতে জাতীয় পর্যায়ে ম্যাচ পরিচালনা করতে চাই। তিনি নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সকল কাজে মেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে। নারীরাও পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারে। দেশের উন্নয়নে সকল ক্ষেত্রে পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নারীরা ভূমিকা রাখছে, আগামীতেও রাখবে।
আম্পায়ারিং প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এই পেশায় প্রথমে অনেক ভুল সামনে আসবে। এগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। অভিজ্ঞ আম্পায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাও রাখাতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
এমএমএস