ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ আসরে ৬০৬ রানের মাইলফলক গড়েছিলেন সাকিব। পুরো আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক সাকিব বল হাতেও নিয়েছিলেন ১১ উইকেট।
দলের ব্যর্থতার ঝুলিতে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল অধিনায়ক মাশরাফির। পুরো আসরে মাত্র ২ উইকেট নিয়েছিলেন দেশ সেরা এই পেসার। আক্ষেপ প্রকাশ করে সাকিব তাই বললেন, ‘আমি সবসময় বিশ্বাস করি, আমরা আরও অনেক দূর যেতে পারতাম। যদি দলের সবার কাছ থেকে সহায়তা পেতাম তাহলে আমরা সেমিফাইনালেও খেলতে পারতাম। ’
‘বহু কারণে অনেক কিছুই সম্ভব হয়নি। যখন একজন খেলোয়াড় পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয়, তখন সে দলের চেয়ে নিজের পারফরম্যান্স নিয়েই বেশি চিন্তায় থাকে। তখন এটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আমি মনে করি, একই ব্যাপার মাশরাফি ভাইয়ের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। অধিনায়ক যখন পারফর্ম করতে পারেন না, এটা তখন তার নিজের ও পুরো দলের জন্যই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অধিনায়ককে অবশ্যই পারফর্ম করতে হবে। এটার কোনো বিকল্প নেই। ’
বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাকিব। তবে মাশরাফির বিদায়ের পর ওয়ানডে অধিনায়কের পদটাও খালি থাকবে। তখন স্বাভাবিকভাবেই ওই দায়িত্বে সাকিবের নাম আসতে পারে। কিন্তু সাকিব তা চান না। তার কাছে এখন নিজের খেলায় মনোযোগ দেওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বরং নতুন কাউকে এই দায়িত্বে দেখতে চান। আর সিনিয়ররা নতুন অধিনায়ককে সাপোর্ট দিয়ে যাবেন।
সাকিব বলেন, ‘মানসিকভাবে আমি ওসবের (অধিনায়কত্বের দায়িত্ব) জন্য প্রস্তুত নই। কিন্তু দল ভালো অবস্থায় নেই, এবং আমি বুঝতে পারছি দলকে একটা ভালো অবস্থানে নিতে হলে দায়িত্বটা নেওয়া উচিৎ। কিন্তু আমি আগ্রহ পাচ্ছি না। দায়িত্ব না নিলে বরং আমি আমার খেলায় মনোযোগ ই। আমাকে ভালো পারফর্ম করতে হবে। ’
‘আমি যদি দায়িত্ব না নিই, আমি আমার খেলায় মনোযোগ দিতে পারব। এটা দলেরও কাজে লাগবে। আমি চাই নতুনরা দায়িত্ব নিক। তাদের কাঁধে দায়িত্ব না দিলে আপনি বুঝতে পারবেন না তারা কেমন করবে। যখন মাত্র ২২ বছর বয়সে আমাকে নেতৃত্ব দেওয়া হলো, কে জানতো আমি কতটা ভালো করব? সামনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসছে। আগামী ৪ বছরের জন্য আমাদের এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। ’
বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে কথিত ঝামেলা নিয়ে সাকিব বলেন, ‘ওসব জিনিস দলের একতা নষ্ট করে। প্রথমত, আমি তেমন কিছুই বলিনি। যদি বলেও থাকি তাহলেও সেটা প্রকাশ করার দায় কে নেবে? এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক কথা হয়েছে। এমনকি এতে কয়েকজন কোচিং স্টাফ ও সিনিয়র খেলোয়াড়রাও ছিলেন। হয়তো তাদের মধ্যেই কেউ এটা করেছে। এসব ঠিক নয়। হয়তো তারা দলের উন্নতি চায় না। ’
‘যখন কেউ ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়, আপনি তখন কারো নাম উল্লেখ করে বলতে পারেন না যে, সে যদি খেলতো তাহলে ভিন্ন কিছু হতে পারতো। এটা খেলোয়াড়দের মনে প্রভাব ফেলে। এধরনের ঘটনায় পারফর্ম করা কঠিন হয়ে যায়। সেদিনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, এই বিশ্বকাপে এসব কারণেই আমরা কিছুই করতে পারব না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
এমএইচএম