ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

আইসিসি’র সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছে বিসিসিআই

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
আইসিসি’র সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছে বিসিসিআই .

২০২৩-৩১ বর্ষচক্রের মধ্যে ‘চ্যাম্পিয়নস কাপ’ নামের টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ভাবছে আইসিসি। কিন্তু ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)।

আইসিসি’র প্রস্তাব অনুযায়ী, আইসিসি’র প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০২৬ ও ২০৩০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০২৭ ও ২০৩১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পাশাপাশি ২০২৪ ও ২০২৮ সালে টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০২৫ ও ২০২৯ সালে ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা হবে। অর্থাৎ, প্রতি বছরই আইসিসি’র কোনো না কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট থাকবে।

ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের নিয়েও আলাদা চ্যাম্পিয়নস কাপ আয়োজন করতে চায় আইসিসি। এখানেও টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই আয়োজিত হবে টুর্নামেন্ট।

আয়োজক আহ্বান করে যে দরপত্র দেওয়া হবে, তাতে রাজস্ব আয়ের শর্ত জুড়ে দিয়েছে আইসিসি। শর্ত অনুযায়ী, প্রতি ইভেন্ট থেকে টিকিট, হসপিটালিটি এবং ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে আয় করতে পারবে আয়োজক দেশ। তবে এর বাইরে বাণিজ্যিক এবং সম্প্রচার স্বত্ব থাকবে আইসিসি’র হাতে।

নতুন টুর্নামেন্টে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দল অংশ নিতে পারবে। মোট ম্যাচ হবে ৪৮টি। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সমান ম্যাচ খেলা হয়েছিল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সমান মর্যাদা পাবে ৫০ ওভারের চ্যাম্পিয়নস কাপ। আর টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নস কাপকে হয়তো বিশ্বকাপের সমান মর্যাদা দেওয়া হতে পারে। এই আসরগুলোতে অংশ নিতে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে আইসিসি’র পূর্ণাঙ্গ সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করা হয়েছে।

নতুন টুর্নামেন্ট আয়োজনের পেছনে আইসিসি’র যুক্তি, ক্রিকেটের ছোট দেশগুলোর আয়ের কথা চিন্তা করে প্রতি বছর একটি করে আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করা জরুরি। কিন্তু মূল সমস্যা ওই ‘বিগ থ্রি’র। নিজেদের আয় কমে যাওয়ার ভয় পেয়ে বসেছে তাদের। নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন তো আছেই, এছাড়া আইপিএলের ম্যাচসংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বিসিসিআই।

কিন্তু আইসিসি’র প্রস্তাবে নাখোশ ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই), ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) এবং ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। এই তিন বোর্ড নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু আইসিসি’র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন কমে যাবে, ফলে তিন বোর্ড আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হবে।  

অন্য দুই ধনী ক্রিকেট বোর্ড এখনও চুপ থাকলেও ঠিকই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিসিসিআই। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও প্রভাবশালী এই ক্রিকেট বোর্ডের একাংশ মনে করছে, আইসিসি’র নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তয়াবনের প্রভাব পড়বে আইপিএলে। এতে আইপিএলের দর্শক সংখ্যা কমে যাবে। ফলে বিপুল পরিমাণ আয় কমে যাবে। এতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রভাব কমবে বিসিসিআই’র। আর এটাই নাকি উদ্দেশ্য শশাঙ্ক মনোহরের নেতৃত্বাধীন আইসিসি’র।

অতটা না হলেও আইসিসি’র সিদ্ধান্তে ভয়ে আছে সিএ ও ইসিবি। প্রতি বছর যদি আইসিসি’র টুর্নামেন্ট থাকে, তাহলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ কমে যাবে। ফলে তাদেরও আয় কমে যাবে। এদিকে বাকি দুই বোর্ডের হয়ে হাল ধরেছে বিসিসিআই। এ নিয়ে বিসিসিআই’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত একদম স্থির। ধরুন, গুরুত্বপূর্ণ কোনো বোর্ড যদি আয়োজনে রাজি না হয়, তাহলে কি আইসিসি নিজের অর্থায়নে ইভেন্ট আয়োজন করবে?’

আইসিসি’র সিদ্ধান্ত যে বাস্তবিক অর্থে অসম্ভব সেটা বুঝাতে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর আইসিসির ইভেন্ট, বিশ্ব ক্রিকেট এভাবে চলে না। আইসিসিকে এটা বুঝতে হবে। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ এর চেয়ে অনেক বেশি জরুরি। এটা (আইসিসির নতুন সিদ্ধান্ত) আইপিএল, বিগ ব্যাশ, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ- সবগুলোকেই বিপদে ফেলবে। তাছাড়া খেলোয়াড়রা আর কত ম্যাচ খেলবে?’

প্রতি বছর বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনে বিশ্বকাপের মর্যাদাও নষ্ট হবে বলে অভিমত তার, ‘প্রতি বছর যদি এটা আয়োজন করা হয়, তাহলে বিশ্বকাপ জেতার আনন্দ আর মর্যাদা দুটোই কমে যাবে। বেশি বাড়াবাড়ি ভালো নয়। একবার বিশ্বকাপ জিতলে আরও চার বছর অপেক্ষায় থাকতে হয়, কিন্তু যদি প্রতি বছরই এমন আয়োজন তাহলে আর বিশ্বকাপের মূল্য কোথায়?’

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।