ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

উইন্ডিজকে দেড়শ-দুইশর মধ্যে থামাতে চায় বাংলাদেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২১
উইন্ডিজকে দেড়শ-দুইশর মধ্যে থামাতে চায় বাংলাদেশ ছবি: শোয়েব মিথুন

দিনশেষে ৩ উইকেট ফেলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা জাগালেও এখনও ঢাকা টেস্টে চালকের আসনে আছে উইন্ডিজ। লিডও দেড়শ পার হয়ে গেছে।

তবে চতুর্থ দিনে সফরকারীদের দেড়শ-দুইশ রানের মধ্যে থামিয়ে লক্ষ্যটা হাতের মধ্যে রাখতে চায় বাংলাদেশ।

শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও বেশিদূর এগোতে পারেনি। টাইগারদের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে ২৯৬ রানে। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করেছে উইন্ডিজ। এখন পর্যন্ত উইন্ডিজের লিড ১৫৪ রানের।

শেষ বিকেলে উইন্ডিজ ছোটখাটো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। ওপেনার ও অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট বিদায় নেন ৬ রানে। এরপর মোসলেকে বিদায় করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরে জন ক্যাম্ববেলকে বোল্ড করেন তাইজুল ইসলাম। কিন্তু বাংলাদেশের সামনে এখনও কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে। বিশেষ করে আগের ইনিংসে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা এনক্রুমা বোনার ও এখনও না নামা কাইল মেয়ার্স পথের কাঁটা হয়ে রয়ে গেছেন। ফলে সকালেই দ্রুত উইকেট ফেলতে না পারলে বিপদ বাড়তে পারে বাংলাদেশের।

চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে জানতে চাইলে দিন শেষে মিরাজ বলেন, ' দ্বিতীয় ইনিংস সবসময়ই কঠিন। ওদের যত দ্রুত সম্ভব অলআউট করা যায় ততই ভালো হবে। প্রথম ইনিংসে উইকেট অনেক ভালো ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে কিন্তু কিছুটা বদলে গেছে। বল টার্ন করছে, লো হয়ে যাচ্ছে। এখন রান করাটা অনেক কঠিন। পঞ্চম দিনে কিন্তু আরও হবে। আমার মনে হয়, মিরপুরে শেষ দুইটা দিন খুব কঠিন হয়। ফলে আমরা বোলাররা যদি ওদের দ্রুত অলআউট করতে পারি তাহলে অর্থাৎ ওদেরকে ১৫০-২০০ রানের ভেতর থামাতে পারি তাহলে সুযোগ থাকবে। তবে ৩০০ রান বা তার বেশি লক্ষ্য দিলে আমাদের জন্য কঠিন হবে। কিন্তু দলের সবাই যদি দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জ নিতে পারে তাহলে ক্রিকেট খেলায় সবই সম্ভব। ' 

তিনি আরও বলেন, 'চট্টগ্রাম টেস্টের দিকে দেখুন। আমরা কিন্তু ভাবিনি আমরা হেরে যাব, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা কিন্তু হেরেই গেছি। আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি যে আমরা হেরে যাব। আমরা ভেবেছিলাম হয় আমরা জিতব নয়তো ড্র হবে। কিন্তু ক্রিকেটে সবই হতে পারে। ফলে এখানে যত রানই হোক না কেন, সবার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ থাকবেই। আমরা এই ম্যাচ জিতে পারলে আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়বে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু হবে। '

এই টেস্টেই শততম টেস্ট উইকেটের দেখা পেয়েছেন মিরাজ। বাংলাদেশের জার্সিতে যা আবার দ্রুততম। রেকর্ড গড়তে মিরাজের লাগলো ২৪ টেস্ট। এর আগে ২৫ টেস্ট খেলে শীর্ষে ছিলেন তাইজুল। সেই সঙ্গে ১০০ উইকেট শিকারি মাত্র চতুর্থ বাংলাদেশি বোলার হলেন মিরাজ। এর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন মোহাম্মদ রফিক, সাকিব আল হাসান ও তাইজুল। এর মধ্যে ৩৩ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ঠিক ১০০টি উইকেট তুলে নেন রফিক। একসময় এই সাবেক বাঁহাতি স্পিনার ছিলেন এই মাইলফলক স্পর্শ করা একমাত্র বাংলাদেশি বোলার।

রেকর্ড গড়ে দেশের ক্রিকেটের সেরাদের কাতারে নাম লেখানো নিয়ে মিরাজ বলেন, 'আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো লাগছে। তারা সবাই কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার। আর আমি ডানহাতি অফ স্পিনার। এত দ্রুত ১০০ উইকেট পাওয়ায় আমার নিজের ভেতরেই ভালো লাগা কাজ করছে। আমি চেষ্টা করব আরও ভালো কিছু করার জন্য। দেশের জন্য আরও উইকেট পাওয়ার জন্য। '

চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর ঢাকা টেস্টেও ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছেন মিরাজ। বোলিংয়ের পাশাপাশি ক্রমেই ব্যাটসম্যান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন এই ডানহাতি স্পিনার। এর পেছনে দলের সবার অবদান আছে বলে জানালেন তিনি, 'বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে ভালো করা আমার জন্য বড় অ্যাডভান্টেজ। আমি বোলার হিসেবেই ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলাম। ব্যাটিংয়ে অতো ভালো করতে পারিনি। কিন্তু সবাই জানতো যে আমি ব্যাটিংটাও করতে পারি। তবে দুর্ভাগ্যবশত হচ্ছিল না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসলে অনেক কঠিন। এখানে অনেক ভালো বোলার থাকে তবে দিনের পর দিন আমি শিখছি আমার ব্যাটিংটা ইম্প্রুভ করার জন্য। আমি যদি আমার পজিশনে ভালো ব্যাটিং করি দলের জন্য তা এডভান্টেজ হবে। আটে নেমে যদি ৫০ রান করতে পারি তাহলে দলের জন্য তা ভালো কাজে দেবে। সেখানে যদি একটা জুটি গড়তে পারি তাহলে দলের জন্য এটা অনেক উপকারে আসবে। '

'আমাকে সবাই বলছে ব্যাটিংটা নিয়ে ফোকাস করতে। আমি নিজেও চেয়েছি। এই টেস্টেই ধরুন দলের সবাই আমাকে পেছন থেকে উৎসাহ দিয়েছে। বিশেষ করে দলের সিনিয়ররা। অধিনায়ক মুমিনুল ভাইও আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছেন। মুশফিক ভাইও সাপোর্ট করেছেন। বিশেষ করে অনুশীলনের সময় তিনি আমাকে অনেক টিপস দিয়েছেন। সবমিলিয়ে সবার উৎসাহ আর সমর্থনে আমি এতদূর আসতে পেরেছি,' যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘন্ট, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২১
এমএইচএম/ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।