ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সিনিয়রদের ব্যাটিং ও মিরাজের ঘূর্ণিতে টাইগারদের জয়

স্পোর্টস ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২১
সিনিয়রদের ব্যাটিং ও মিরাজের ঘূর্ণিতে টাইগারদের জয় ছবি: শোয়েব মিথুন

তিন সিনিয়র ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফিফটির পর মেহেদী হাসান মিরাজের অসাধারণ বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৩ রানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা।

 

রোববার (২৩ মে) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে নামে দু’দল। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ভার শেষে ৬ উইকেট হারয়ে ২৫৭ রান করে। জবাবে ব্যাটি করতে নেমে ৪৮.১ ওভারে ২২৪ করে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।

২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার ইনিংসে কিছুটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা দানুশকা গুনাথিলাকাকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। ফলে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ১৯ বলে ৫টি চারে ২১ রান করা লঙ্কান ওপেনার মিরাজের বলে তাকেই ক্যাচ দেন।

মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের প্রথম স্পেলের পর বোলিংয়ে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। আর এসেই সাফল্য পান কাটার মাস্টার। পাথুম নিশাঙ্কাকে ব্যক্তিগত ৮ রানে আফিফ হোসেনের ক্যাচে মাঠ ছাড়া করান তিনি।

কুশল পেরেরার সঙ্গে জুটি বড় করতে থাকা কুশল মেন্ডিসকে ফেরান সাকিব আল হাসান। দলীয় ৮২ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২৪ রানে থাকা মেন্ডিসকে মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ ক্যাচে প্যাভিলিয়নে পাঠান সাকিব। এর ফলে প্রথম শ্রেণি, লিস্ট 'এ' এবং স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে সাকিব ১০০০ উইকেটের  মাইলফলক ছুঁয়েছেন।

দারুণ ঘূর্ণিতে শ্রীলঙ্কান শেষ তিন ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২২তম ওভারে ৫০ বলে একটি চারে ৩০ রান করা শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক কুশল পেরেরাকে বোল্ড করেন স্পিনার মিরাজ। আর পরের ওভারে এসে নতুন ব্যাটসম্যান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকেও (৯) বোল্ড করেন তিনি। ২৮তম ওভারে আসেন বান্দারাকেও (৩) বোল্ড করেন।

পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে একাই লড়াই চালান শ্রীলঙ্কার ৮ নম্বর ব্যাটসম্যান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। তিনি হাফসেঞ্চুরিও তুলে নেন। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শ্রীলঙ্কাকে যে লড়াই চালাতে হচ্ছে, তার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন হাসারাঙ্গার হাতে। তবে শেষ আফিফ হোসেনের ক্যাচে তাকে ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তিনি ৩টি চার এবং ৫টি ছক্কা ৬০ বলে ৭৪ রান করেন। আগের উইকেটে দাসুন শানাকাকেও বোল্ড করে ফিরিয়েছিলেন সাইফ।

হাসারাঙ্গা বিদায়ের পরের ওভারেই তার সঙ্গে ফিফটি জুটি গড়া ইসুরু উদানাকে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। ২৩ বলে ২১ করে মিরাজকে ক্যাচ দেন তিনি।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট পান মিরাজ। এছাড়া মোস্তাফিজ ৩টি  ও সাইফউদ্দিন ২টি উইকেট দখল করেন।

টস জিতে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তামিম, মুশফিক ও রিয়াদের ব্যাটে ভর করে আড়াইশ রানের গণ্ডি পার হয় বাংলাদেশ।  

কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন ওপেনার লিটন দাস।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দুষ্মন্থ চামিরার অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে ব্যাট ছোঁয়াতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে থাকা ধঞ্জনয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। আউট হওয়ার আগে ৩ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি ডানহাতি ওপেনার।

দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে ব্যাটিংয়ে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ১৫ রানের ইনিংস খেলে ধরলেন সাজঘরের পথ।  

ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে লঙ্কান পার্ট-টাইম বোলার গুনাথিকালার স্লোয়ারে হাঁকাতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। বিদায়ের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ১৫ রান, বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ২টি।

লিটন-সাকিবের বিদায়ের পরও উইকেটে অবিচল থেকে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন তামিম ইকবাল। তবে হাফসেঞ্চুরি করে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার করা ২৩তম ওভারের পঞ্চম বলে তামিম এলবির ফাঁদে পড়ে ফিরে যান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৭০ বলে ৬টি চার ও এক ছক্কায় ৫২ রান করেন। এটি তার ক্যারিয়ারের ৫১তম হাফসেঞ্চুরি। তবে পরের বলেই স্কুপ করতে গিয়ে মোহাম্মদ মিঠুন শূন্য রানে ফিরে যান।

১০০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশের ইনিংস সামলানোর দায়িত্ব নেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪০তম ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। তবে সেঞ্চুরির সুযোগ থাকলেও বঞ্চিত হন মি. ডিপেন্ডেবল। লক্ষণ সান্দাকানের বলে আউট হওয়ার আগে ৮৭ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৮৪ করেন তিনি।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ১২২ বলে ১০৯ রান করেন মুশফিক। যেখানে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৪তম হা্ফসেঞ্চুরির দেখা পান মাহমুদউল্লাহ। ডি সিলভার তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে ৭৬ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৪ করেন তিনি।

শেষদিকে আফিফ হোসেন ২৭ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন।

লঙ্কান বোলারদের মধ্যে ডি সিলভা সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান। এছাড়া চামিরা, গুনাথিলাকা ও সান্দাকান একটি করে উইকেট দখল করেন।

মিরাজ বাংলাদেশ দলের জয় সহজ করে দিলেও ব্যাটিংয়ে দারুণ পারফরম্যান্স করা ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছে মুশফিকুর রহিম। মিরাজ অবশ্য মোস্ট ভ্যালুয়েবল ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন।

আগামী ২৫ মে একই ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২১
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।