ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাড়ে তিনশ’ বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করেছি: আনোয়ার পাশা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২২
সাড়ে তিনশ’ বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করেছি: আনোয়ার পাশা

চট্টগ্রাম: অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, পাহাড়ে জীবনযাত্রায় ভিন্নতা ও বৈচিত্র্য আছে। পিছিয়ে পড়াদের মধ্যে আরও পিছিয়ে পড়া নারীরা।

তাদের জন্য সেবা নিশ্চিত করা সরকারসহ সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কার্যক্রম চাকরি জীবনে শুরু করি ২০১০ সালে নোয়াখালীতে।
সাড়ে তিনশ’র মতো বাল্যবিয়ে আমি প্রতিরোধ করেছি। ভিকটিমরা অনেকে নিজেরা ফোন করত। অভিযানে গিয়ে দেখেছি অনেক বর পালিয়ে গেছে। এখনো বড় শহরগুলোতে বাল্যবিয়ের প্রবণতা আছে।

শুধু বাল্যবিয়ে ঠেকানো নয় আরো অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। যার বাল্যবিয়ে ঠেকাচ্ছি তাকে আমি সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে পারছি কিনা। যদিও আমরা সাম্যের কথা বলি কিন্তু নারীর প্রতি পরিবার ও সমাজের মানসিকতায় অনেক বৈপরীত্য আছে। কন্যা শিশু হলে মাকে দোষারোপ করছি অথচ তাতে মায়ের বিন্দু পরিমাণ ভূমিকা বা দায় নেই। এখন সময় বদলাচ্ছে। শুধু তথ্যপ্রযুক্তি নয় নাগরিকদের চিন্তায়ও ডিজিটাল এবং স্মার্ট হতে হবে। তাহলেই কেবল ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। শুধু পাহাড়ে নয় সমতলে অনেক রকম মাইন্ডসেট আছে, অনেক কুসংস্কার আছে। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

‘যুব ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিশ্চিত হোক যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়ক দুই দিনব্যাপী এসআরএইচআর কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) এ কনফারেন্সের আয়োজন করে।  

কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপিএসের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সঞ্জয় মজুমদার। মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রেজেন্টেশন দেন বিএনপিএসের মাস্টার ট্রেনার রিমি চাকমা ও সুমিত বণিক। সঞ্জয় মজুমদারের সঞ্চালনায় এই সেশনে প্রধান আলোচক ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের রিজিওনাল কনসালটেন্ট ডা. ছেহেলী নার্গিস। প্যানেল আলোচক ছিলেন উইভ'র নির্বাহী পরিচালক নাই উ প্রু মারমা এবং টংগ্যা'র নির্বাহী পরিচালক প্রাণজিত দেওয়ান। আলোচনায় অংশ নেন কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা।  

দ্বিতীয় অধিবেশন হয় 'জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা' বিষয়ে। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খাদিজা মিতু। আলোচক ছিলেন ইলমার নির্বাহী পরিচালক জেসমিন সুলতানা পারু, কেএমকেএসের নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা ও একেএসের নির্বাহী পরিচালক ডনাই প্রু নেলী। এই অধিবেশনে প্রেজেন্টেশন দেন বিএনপিএসের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কোঅর্ডিনেটর নাসরিন বেগম।  

অধিবেশনগুলোতে সৃজনশীল কাজের প্রদর্শনী হিসেবে নাটক ও পোস্টার উপস্থাপন করেন কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন মেন্টর, শিক্ষার্থী, কিশোরী ক্লাবের সদস্য এবং অংশগ্রহণকারীরা।

‘আমাদের জীবন, আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্রকল্পে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে ও সিমাভি নেদারল্যান্ডসের কারিগরি সহযোগিতায় ৩ পার্বত্য জেলায় ১০টি স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (সিএসও) বাস্তবায়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। তিন পার্বত্য জেলার ১৭টি উপজেলার ৬১টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের অধীনে ৩০০ কিশোরী ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ১২ হাজার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২২
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।