ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা,পাঁচ মাস পর স্বামী গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা,পাঁচ মাস পর স্বামী গ্রেফতার ...

চট্টগ্রাম: নগরের ইপিজেড থানা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওড়না প্যাঁচিয়ে স্ত্রী সর্জিনা আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে স্বামী মো.হাসান আকন্দকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  

বুধবার (১২ এপ্রিল) মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার হাসারা দক্ষিণ লস্করপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট।

 

গ্রেফতার মো.হাসান আকন্দ (২৭) পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার মাঝপাড়া আকন্দ বাড়ির আব্দুর রহিমের ছেলে। সে স্ত্রীকে নিয়ে নগরের ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা আয়েশার মা’র গলি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো।

 

পিবিআই জানিয়েছে, সর্জিনা আক্তার ইপিজেড এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তার স্বামী হাসান রিকশা চালাতো। তাদের সাত মাস বয়সী মো. হাসিব নামে এক সন্তান রয়েছে। কর্মস্থলে যাওয়ার সময় পুত্রকে পার্শ্ববর্তী একটি বাসায় রেখে যেতেন। সর্জিনা তার স্বামী হাসানের রিকশা চালানো পছন্দ করতেন না। এছাড়া হাসান সর্জিনা আক্তারের আত্মীয়-স্বজনের বেড়াতে আসাও পছন্দ করতেন না। আবার সর্জিনা আক্তারকেও হাসানের বাবা-মা পছন্দ করতেন না। এজন্য চাইলেও সর্জিনাকে হাসান তার বাড়িতে রাখতে পারেনি। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া লেগে থাকতো।  

গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় সর্জিনার মামা বাসায় আসেন। এসময় মামা শ্বশুরকে আপ্যায়নের জন্য নাস্তা আনতে বললে হাসান অল্প পরিমাণ নাস্তা নিয়ে আসেন। এরপর মামা শ্বশুর ৫শ টাকা চাইলে হাসান সর্জিনার মাধ্যমে ১শ টাকা দেন। সর্জিনার মামা চলে যাওয়ার পর আপ্যায়ন ও টাকা প্রদানের বিষয়কে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সর্জিনাকে ধাক্কা দিলে দেওয়ালে আঘাত পেয়ে ফ্লোরে পড়ে যায়। হাসান সর্জিনা আক্তারের বুকের ওপর বসে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। রাত তিনটার দিকে ওই ভবনের ছাদে পানির ট্যাংকের ভিতরে সর্জিনার মরদেহ রেখে আসে। পরদিন পাশের বাসার লোকজনকে জানায়-তার স্ত্রী ঝগড়া করে বাসা থেকে চলে গেছে। ওইদিন সন্ধ্যায় বাসায় এসে সন্তানকে রেখে অজ্ঞাতস্থানে চলে যায়। এ ঘটনার দুইদিন পর ৫ নভেম্বর সর্জিনার মরদেহ উদ্ধার করে ইপিজেড থানা পুলিশ। পরবর্তীতে ইপিজেড থানায় স্বামী হাসানকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট প্রধান পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, সর্জিনা হত্যাকাণ্ডের পর হাসানকে গ্রেফতার করতে ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট। তবে তিনি মোবাইলসহ কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার না করায় কোনোভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। উপরন্তু তিনি ঘনঘন স্থানও পরিবর্তন করেন। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে হাসানের সাময়িক অবস্থান ঢাকা, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। সুচতুর হাসান আকন্দ ঘনঘন অবস্থান পরিবর্তনপূর্বক মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার হাসারা দক্ষিণ লস্করপুর আবুল হোসেনের গরুর ফার্মে চাকরি নেন। সেখানে সুমন ছদ্মনামে অবস্থান করতেন। বুধবার তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।