ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দেড় হাজার শয্যা পাচ্ছে চমেক হাসপাতাল

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৫ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৩
দেড় হাজার শয্যা পাচ্ছে চমেক হাসপাতাল ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: জনস্বাস্থ্য পরিষেবার সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের আটটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শয্যা বাড়বে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি প্রকল্প পরিকল্পনা তৈরি করবে। এতে নতুন শয্যা স্থাপনের জন্য ভবন তৈরি ও সংস্কার করার পরিকল্পনা উল্লেখ থাকবে।
শয্যা বাড়ানোর কাজ শুরু হবে আগামী অর্থবছরে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নতুন শয্যার সঙ্গে অপারেশন থিয়েটারও আধুনিকায়ন করা হবে। বাড়ানো হবে আইসিইউ বেড। বেশি সংখ্যক মানুষকে সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গত ২ মে আয়োজিত সভায় এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের প্রধান আটটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১০ হাজার শয্যা বাড়ানো হবে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া অন্যান্য হাসপাতালে ন্যূনতম ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ দেড় হাজার নতুন শয্যা স্থাপন করা হবে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে দেড় হাজার শয্যা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালের ২৫ মে চমেক হাসপাতালকে ২২০০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও বর্ধিত শয্যায় সেবা চালুকরণের অনুমোদন দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শওকত উল্লাহ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ১৩১৩ শয্যা হতে ২২০০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও বর্ধিত শয্যায় সেবা চালুকরণে অর্থ বিভাগের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো। তবে শর্ত থাকে যে, এ সংক্রান্ত সকল বিধি-বিধান, আনুষ্ঠানিকতা ও নিয়ম-কানুন অবশ্যই পালন করতে হবে।

সর্বশেষ ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট চমেক হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ১ হাজার ১০টি থেকে বেড়ে ১৩১৩টিতে উন্নীত হয়। তবে ১৩১৩ শয্যা হলেও বর্তমানে হাসপাতালে নিয়মিত রোগী ভর্তি থাকে ৩ হাজারের অধিক। শয্যার তুলনায় বাড়তি রোগীদের হাসপাতালের বারান্দাসহ বিভিন্ন খালি জায়গায় থাকতে হয়। এতে অনেক ঝুঁকি তৈরি হয়।

হাসপাতালের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ ও ২০২২ সালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর হার বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। বহির্বিভাগে রোগীর হার বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। একইসঙ্গে জরুরি বিভাগে রোগী বেড়েছে ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২২-২৩ সালে হাসপাতালের জন্য অর্থ  বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৩০ কোটি ১০ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বাংলানিউজকে বলেন, অতিরিক্ত চাপ থাকায় হাসপাতালের বারান্দায় রাখতে হয় রোগীদের। এ অবস্থায় হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চট্টগ্রামের মানুষের জন্য এটি অনেক বড় পাওয়া। শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সে অনুপাতে হাসপাতালের বাজেট-বরাদ্দ, জনবল সবই বাড়বে। এতে চিকিৎসা সেবার পরিসরও বাড়বে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. মহিউদ্দিন জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ (২০২২ সালের ডিসেম্বর) মূল্যায়ন সূচকে দেশের ১৭টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যসেবা, বহির্বিভাগে সেবা, চিকিৎসা সরঞ্জামের পর্যাপ্ততা ও ব্যবহারসহ সার্বিক সেবা ও সুবিধা বিবেচনায় জাতীয় পর্যায়ে দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে। মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় (ফ্যাসিলিটি স্কোরিং) মোট ৮০ স্কোরের মধ্যে চমেক হাসপাতালের প্রাপ্ত স্কোর ৬৩।

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৩ 
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।