ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শর্ট প্যাকেজের হাজিদের সঙ্গে বিমানের আচরণে সুজনের ক্ষোভ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৩
শর্ট প্যাকেজের হাজিদের সঙ্গে বিমানের আচরণে সুজনের ক্ষোভ

চট্টগ্রাম: চলতি হজ মৌসুমে চট্টগ্রাম থেকে শর্ট প্যাকেজে হজে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমাতাসুলভ আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।  

রোববার (৪ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিমানের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

সুজন বলেন, চলতি হজ মৌসুমে চট্টগ্রাম থেকে ১০ হাজারের বেশি হজযাত্রী হজ আদায়ের জন্য সৌদিআরব গমন করবেন। এদের মধ্যে বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসী ছাড়াও বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরিরত হজযাত্রীরা রয়েছেন।

যারা ছুটিগত সমস্যার কারণে ফুল প্যাকেজের হজের পরিবর্তে শর্ট প্যাকেজে দেশে প্রত্যাবর্তন করে থাকেন। এসব শর্ট প্যাকেজের মধ্যে যারা ২০ দিনের মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দেশে চলে আসতে চান তাদের জন্য অতিরিক্ত ৫০০ ডলার, যারা ২৫ দিনের মধ্যে দেশে আসতে চান তাদের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ ডলার এবং যারা ৩০ দিনের মধ্যে দেশে আসতে চান তাদের জন্য অতিরিক্ত ২০০ ডলার চার্জ ধার্য করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এসব শর্ত মেনে যারা শর্ট প্যাকেজের যাত্রী তারা বিমানের টিকেটও কনফার্ম করেছেন। যদিও বিমান অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা অতিরিক্ত বিমান ভাড়া আদায় করছে প্রতিজন হজযাত্রীদের কাছ থেকে। তারপরও দেশের হজযাত্রীগন বিদেশি এয়ারলাইন্সের তুলনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে সবসময় পছন্দের তালিকায় রাখে। যার মূল কারণ হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স স্বদেশী এয়ারলাইন্স এবং বিমানের মাধ্যমে হজে গেলে স্বদেশী এয়ারলাইন্সটি লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করা। আর এসব চিন্তা ভাবনা করে মূলত দেশীয় এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে হজে যেতে ইচ্ছুক হজযাত্রীরা।  

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম থেকে যেসব হজযাত্রী শর্ট প্যাকেজের টিকেট কেটেছেন তাদেরকে কোনভাবেই শর্ট প্যাকেজ দিতে পারবেন না। হজযাত্রীদের ৪৩ দিনের প্যাকেজেই থাকতে হবে যা চট্টগ্রামের যাত্রীদের প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমাতাসুলভ আচরণ বলে আমরা মনে করি।  

এখানে উল্লেখযোগ্য যে শর্ট প্যাকেজের যাত্রীগণ সাধারণত প্রবাসী এবং বিদেশের বিভিন্ন দেশে চাকুরি করে দেশের জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলছেন। এখন যদি তারা শর্ট প্যাকেজের মাধ্যমে সময়মতো হজ শেষ করে নিজ নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে না পারেন তাহলে তাদের কি অবস্থা হবে সেটা কি বিমান বাংলাদেশ ভেবে দেখেছেন? তাদের চাকুরি কি আদৌ থাকবে? বর্তমানে বৈশি^ক বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রবাসীরা এমনিতে চাপে রয়েছেন। শর্ট প্যাকেজের যাত্রীরা সাধারণত এসব প্যাকেজে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার আগে নিজ নিজ কোম্পানি থেকে ছুটি নিয়ে হজ করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন। সে মোতাবেক যাবতীয় কর্মাদি পরিচালনা করেন। হজযাত্রার সাথে বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভূক্ত থাকে বিধায় একজন হজযাত্রীকে হজে যাওয়ার আগে অনেক কাজ সম্পাদন করতে হয়।  

হজের যাবতীয় কর্মকান্ড শেষ করে এখন হজ ফ্লাইটের প্রাক্কালে এসব শর্ট প্যাকেজের যাত্রীদের সাথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এ ধরনের আচরণ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মনে করি এ ধরনের অপেশাদারিত্ব আচরণের ফলে যারা স্বদেশী এয়ারলাইন্স ব্যবহার করে হজ অথবা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাকুরি কিংবা ভ্রমণ করেন তারা সত্যিকার অর্থেই নিরুৎসাহিত হবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে শর্ট প্যাকেজের যাত্রীরা অন্য এয়ারলাইন্স থেকে ৮০-৮৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ফিরতি টিকেট কাটতে বাধ্য হচ্ছেন, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব শর্ট প্যাকেজের যাত্রীদের মধ্যে যারা অন্য এয়ারলাইন্স থেকে দেশে আসার জন্য ফিরতি টিকেট কেটেছেন তাদেরকে অন্ততপক্ষে ফিরতি টিকেটের টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।  

সরকারকে বেকায়দায় ফেলা কিংবা অজনপ্রিয় করে উপস্থাপনের জন্য এ সিদ্ধান্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিতর লুকিয়ে থাকা সরকার বিরোধী চক্রের আরেকটি ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন খোরশেদ আলম সুজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।