চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের চালান উদ্ধারের মামলার বিচার ৯ বছরেও শেষ হয়নি। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়।
২০১৫ সালের ৬ জুন পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল ছিল।
পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। কোকেন জব্দের ঘটনায় চট্টগ্রামের বন্দর থানায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান আইনের ধারায় একটি মামলা হয়। আসামি করা হয় চালানটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদকে। তদন্ত শেষে কোকেন জব্দের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় র্যাব।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো.আবদুর রশিদ জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দের ঘটনায় মামলা হয় দুটি। এর মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় এক আসামি মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার আবেদন করেন উচ্চ আদালতে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ আদেশ এখনো পাওয়া যায়নি। এ কারণে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাদক মামলায় ৩১ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ মনে করে, এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ আরও ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাই আরও ৪ গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আবেদন করা হয় আদালতে। আদালত তা মঞ্জুর করেন। আলোচিত মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ তৎপর রয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, কোকেন জব্দের ঘটনায় মাদক আইনে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলেও নতুন করে আরও সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আর চোরাচালান আইনের মামলায় এক আসামি উচ্চ আদালতে গেলে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন প্রধান আসামি নুর মোহাম্মদসহ বেশিরভাগ আসামি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নূর মোহাম্মদের প্ররোচনা ও যোগসাজশে বিদেশে অবস্থানরত পলাতক দুই আসামির মাধ্যমে তেলের আড়ালে আমদানি নিষিদ্ধ কোকেন আনা হয়েছে।
তবে নূর মোহাম্মদের পরিবার দাবি করেছে, তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে কেউ চালানটি এনেছে। তারা চালানটির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলেননি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। দুটি মামলায় আসামি করা হয় নুর মোহাম্মদসহ ১০ ব্যক্তিকে।
মাদক মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল। চোরাচালান আইনের মামলায় আসামি নুর মোহাম্মদকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়ায় আদালত পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। চোরাচালান মামলায় যখন বিচার শুরু হয়, তখন মাদক মামলায় সাক্ষ্য নেওয়া হয় ২২ জনের। রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে মামলার ঘটনা ও আসামিরা একই হওয়ায় ২২ সাক্ষীর সাক্ষ্য চোরাচালান মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৪
এমআই/টিসি