ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি পুরোদমে চালুর আহ্বান মেয়র রেজাউলের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৪
পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি পুরোদমে চালুর আহ্বান মেয়র রেজাউলের

চট্টগ্রাম: সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে উল্লেখ করে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি পুরোদমে চালু করতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।  

বুধবার (২৪ জুলাই) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে নগরের পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মেয়র এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, যাত্রী, মালিক, গাড়ি ও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে প্রশাসন সজাগ আছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে জানিয়ে মেয়র বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও জঙ্গিরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।

সাধারণ ছাত্ররা স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র টের পেয়ে আন্দোলন থেকে সরে গেলেও স্বাধীনতাবিরোধীরা আন্দোলনের আড়ালে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। তাদের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রমজীবী মানুষ। আন্দোলনের নামে তারা গাড়ি জ্বালিয়ে, গাড়ি ভাংচুর করে পরিবহনখাতের বহু মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। এজন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। একাত্তরে আমরা ওদের পরাজিত করেছি, চব্বিশেও করব। রাতে পরিবহনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গাড়ি মালিক-শ্রমিকদের নেতৃত্বে কমিটি করে নিরাপত্তা টহল দিতে হবে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে অবহিত করলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।  

এ সময় মেয়র পুলিশ প্রশাসনকে কোনো গাড়ি সহিংসতার শিকার হলে মালিক মামলা করতে চাইলে মামলা নেওয়ার পাশাপাশি সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে মেয়র বলেন, আমি ইতোমধ্যে আগ্রাবাদে পে-পার্কিং চালু করেছি। কুলগাঁওতে বাস টার্মিনাল নির্মাণকাজ পুরোদমে চলছে। বাস স্টপেজ নির্ধারণে জরিপ করে স্থান নির্ধারণের পর উন্নত দেশগুলোর আদলে আলাদা রং দিয়ে বাস স্টপেজ চিহ্নিত করা হবে। ডিজিটাল ট্রাফিক লাইট সিস্টেম নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করছি। পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো সহযোগিতা করলে সরকারের কোনো একটি খাস জমি চিহ্নিত করে বরাদ্দ দিলে বাস ও ট্রাক-লরির জন্য টার্মিনাল করার জন্যও আমি পদক্ষেপ নেব।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে। পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলে বাজারে পণ্যের সংকট দেখা দিয়ে সাধারণ মানুষ কষ্ট পায়। এজন্য পুলিশ আপনাদের পাশে আছে আপনারা সরকার নির্ধারিত সময় ও গাইডলাইন মেনে পুরোদমে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা নিন।

বিআরটিএর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. মাসুদ আলম বলেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার চিত্র বদলে গেছে। ফোর লেন হয়েছে, টানেল হয়েছে, মেট্রোরেল হয়েছে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

সভায় পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মাহবুবুল হক মিয়া, চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মনজুরুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল, আমজাদ হোসেন হাজারী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চল কমিটির সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা, উত্তর চট্টগ্রাম ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আহসানউল্যা চৌধুরী হাসান,  চট্টগ্রাম বিভাগীয় ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল মাওলা, চট্টগ্রাম জেলা সড়ক মালিক গ্রুপের মহাসচিব মো. ইউনুছ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ, পণ্য পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কেএম মহিউদ্দিন বক্তব্য দেন।

প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন চসিক কাউন্সিলরদের পক্ষে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে চসিকের পদক্ষেপ তুলে ধরেন। চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিনের সঞ্চালনায় সভায় অংশ নেন আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর মো. ইলিয়াছ, আবদুস সালাম মাসুম, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, প্রধান প্রকৌশলী শাহীন উল ইসলাম প্রমুখ।

অসহায়দের খাবার বিতরণ

কারফিউতে আটকে পড়া কয়েকশ’ অসহায় নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বিকেলে বহদ্দারহাট এলাকায় মেয়রের উদ্যোগে এ মানবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

মেয়র বলেন, কোমলমতি ছাত্রদের সরলতার সুযোগ নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে। তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও কৌশলী নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধীদের সব ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে। সাধারণ ছাত্ররা প্রকৃত অবস্থা বুঝতে পেরে আন্দোলন থেকে সরে গেছে। তাদের অপচেষ্টার কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ। এজন্য কারফিউতে সংকটে থাকা শ্রমজীবী মানুষের মাঝে খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সমাজের বিত্তবানদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, কারফিউতে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবীদের কষ্ট লাঘবে বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে তাদের কষ্ট লাঘব হবে, আমরা এগিয়ে যাব সুখী সমাজ গঠনে।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।