চট্টগ্রাম: অর্থনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেছেন, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাবেক সরকারের সব থেকে বড় সাদা হাতি। আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বড় অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদে ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংস্কারের অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে দেশের প্রতিটি বিভাগে ধারাবাহিক সংলাপ করছে।
ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকার দেশকে লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছে, যার কারণে রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। দুদককে সংস্কার এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান করতে হবে। নারীদের জন্য এক তৃতীয়াংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ রাখতে হবে। স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা গেলে সংস্কারের অনেকটা পথ এগিয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও ভোটের মাধ্যমে হওয়া কাম্য। সংবিধানকে দ্বিকক্ষীয় কাঠামোতে রূপান্তর করা এবং সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।
সংসদ বিষয়ক গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধান পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে হবে। নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করার মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার করা সম্ভব। কারণ নির্বাচনের পর যে দল ক্ষমতায় আসে তাদের মধ্যে পরিবর্তন করার প্রবণতা থাকে। ফলে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার হলে সকল ব্যবস্থার সংস্কার হওয়া সম্ভব।
সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান না হলেও একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। শেষ সরকার ব্যর্থ হতে পারে, তবে এটি সামগ্রিকভাবে জাতির ব্যর্থতা নয়। জনগণকে গণতান্ত্রিক দেশ গঠনে আশাবাদী এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি দূর করা এবং সমাজে সংবিধানের সুষ্ঠু প্রতিফলনই হতে পারে নতুন সংবিধানের সার্থকতা। শিক্ষার মান উন্নয়ন, গবেষণার কাজে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা, কারিগরী শিক্ষার প্রসার বাড়াতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী একজন দর্শক পার্বত্যাঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত না হওয়ার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দায়ী করেন।
জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আইনজীবী, রাজনীতিক, শিল্প উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমকর্মী, অধিকারকর্মী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নারী সংগঠক, স্বেচ্ছাসেবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাজীবীরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংস্কার বিষয়ে তাদের মতামত জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২৪
এমআই/টিসি