ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম বর্ষ থেকেই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৪
উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম বর্ষ থেকেই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য একজন শিক্ষার্থীর প্রয়োজন গবেষণা কাজে অংশগ্রহণ করা। আর সেটা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বর্ষ থেকেই হতে হবে।

সেই সঙ্গে নিজের কৌতূহল কাজে লাগিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হয় তাকে। তবে এক্ষেত্রে সব হতাশা কাটিয়ে সাহসের সঙ্গে লেগে থাকলেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এডুমেক্স আন্তর্জাতিক এডুকেশন সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তরা।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা ২টায় চবির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে বিদেশি উচ্চশিক্ষা বিষয় এডুমেক্স কনসালটেন্সির উদ্যোগে আয়োজিত হয় সেমিনারটি।  

সেমিনারে কি-নোট স্পিকার ছিলেন এরাসমুন্ডাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ড. আশিকুর রহমান। সেশন চেয়ার ছিলেন ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসাইন। বক্তব্য দেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহীদুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হায়ার স্টাডিজ সোসাইটির প্রেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেক্রেটারি দিদারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাচার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা লিওন হাসান এবং ইউনিভের কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ লাবিব।  

ড. আশিকুর রহমান বলেন, উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার জন্য আমাদের বিভিন্ন দেশের ভালো স্কলারশিপগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে। তা ছাড়া কিছু বিষয় আপনাকে মাথায় রেখে চলতে হবে। প্রথমত, আপনার একাডেমিক রেজাল্ট। এটা যত বেশি সম্ভব ভালো করতে হবে। কারণ যত ভালো রেজাল্ট তত বেশি স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা। এরপরে রয়েছে আপনার সিভি। এটা যত বেশি রিসার্চ বেইজড হবে ততো ভালো। এরপর রয়েছে, মোটিভেশান লেটার, রেফারেন্স লেটার এবং সর্বশেষ আপনার ভাষাগত দক্ষতা। তবে আমাদের মধ্যে প্রচুর ভয় ও হতাশা কাজ করে। তা ছাড়া পারিবারিক চাপও অনেক বেশি আমাদের ওপর প্রভাব ফেলে। এসব বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। এগুলো নিজের মধ্যে রাখলে কেউ সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। স্কলারশিপের জন্য আমাদের কৌতূহল নিয়ে কাজ করতে হবে। নিজের মধ্যে সাহস রেখে কাজ করতে হবে।  

তিনি বলেন, প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী তাদের গ্রাজুয়েশন বা পিএইচডি ডিগ্রির জন্য বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যায়। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক একটা বিষয় কাজ করে। ইউরোপে এরাসমকস মুন্ডাস স্কলারশিপে মাসিক ১৪০০ ডলার করে দেওয়া হয়। তা ছাড়া শুধু ইউরোপে ১০ হাজারের বেশি স্কলারশিপ দেওয়া হয়।  

এমআইএউ এর সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, মানুষকে কোনো বিষয়ে উপলব্ধি করানোর যে দক্ষতা একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সেটা আমাদের বোঝা খু্ব বেশি প্রয়োজন। আপনি যত বেশি সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবেন ততই আপনার দক্ষতা বাড়বে। উচ্চশিক্ষা অর্জনে আপনার বৈশ্বিক ক্যারিয়ার সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে আপনার দক্ষতা আপনাকে সবার সামনে সুন্দর একটি অবস্থানে তুলে ধরবে।  

সেমিনারে সেশন চেয়ার ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসাইন বলেন, আজকের সেমিনার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাহস ও আগ্রহ বাড়াবে বলে আমি মনে করি। তবে আমাদের এই মোটিভেশান ধরে রাখতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে।  

আমেরিকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সাবেক ফ্যাকাল্টি মোহাম্মদ রাশেদ উজ্জামান বলেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থী ইউটিউব দেখে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। তবে সেটা আদতে কোনো সমস্যা সমাধানের মাধ্যম নয়। আপনাকে অভিজ্ঞদের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে, যারা বাস্তবিকভাবে আগে এসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। বাংলাদেশে থেকে যদি চিন্তা করেন, আপনি বিদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে যাবেন। তবে আপনাকে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।  

তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগে আমাদের বাধাগুলো খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমত, কম্পিউটার ভিত্তিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এরপরই আমাদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন।  

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে অন্তত একবার হলেও বাইরের দেশে যাওয়া প্রয়োজন। কারণ আপনি কঠোর পরিশ্রম করতে শিখবেন, নিজেকে একজন নমনীয় নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। ইংরেজি এবং রিসার্চ স্কিল থাকলেই একজন শিক্ষার্থী দাবি করতে পারবে যে সে একজন গ্লোবাল নাগরিক। একজন শিক্ষার্থীকে তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বর্ষ থেকেই গবেষণা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে। আশা করি আপনারা চেষ্টা করলেই পারবেন।  

এডুমেক্স কনসালটেন্সির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবু হানিফা মোহাম্মদ নোমান বলেন, আমাদের কাজ স্কলারশিপ নিয়ে যেসব শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে চায় তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা। আমরা যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে আজকের পার্টিসিপ্যান্টদের জন্য আমাদের কনসালটেন্সি ফি শতভাগ ছাড় দেব।  

এডুমেক্স কনসালটেন্সির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার কামরুল হাসান বলেন, একজন শিক্ষার্থীর এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস, রিসার্চ পেপারসহ ভাষা দক্ষতা দেশে ও বিদেশে আপনার যোগ্যতাকে তুলে ধরবে। তাই এ বিষয়গুলোসহ উচ্চশিক্ষা বিষয়ক যেকোনো প্রকার কাউন্সিলিং বা স্কলারশিপের জন্য আমরা আপনাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৪
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।