ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

২৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হককে স্মরণ

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৫
২৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হককে স্মরণ

চট্টগ্রাম: রাউজানের কীর্তিমান পুরুষ, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, বুদ্ধিজীবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ. কে ফজলুল হক চেয়ারম্যান-এর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বক্তারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে তাঁর অনন্য অবদান গোটা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।   মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী সময়ে মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে, বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নির্ভরযোগ্য কীর্তিমান সংগঠক হিসেবে সাহসী ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধতেই তিনি থামেননি।

পরবর্তী সময়ে দেশ গড়ার সংগ্রামেও অবতীর্ণ হন।    মুক্তিযোদ্ধা এ. কে ফজলুল হক চেয়ারম্যান ছিলেন বহুমাত্রিক কর্মযজ্ঞের নায়ক।


বুধবার মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অপর্ণের পর সংক্ষিপ্ত স্মরণানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ। মরহুমের স্মৃতিচারণ করে আলোচনায় অংশ নেন-রাউজান থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাউজান থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর চৌধুরী, নোয়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কফিল উদ্দিন চৌধুরী, গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা কিরণ লাল আচার্য্য, মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক নির্মল চন্দ্র দাশ, স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজ মিয়া, মরহুমের ছোট ভাই মো. মুজিবুল হক, মো. এমদাদুল হক প্রমুখ। পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য দেন মরহুমের পুত্র লেখক শওকত বাঙালি।

শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবী বলেন, মরহুম ফজলুল হক থানা আওয়ামী লীগের অন্যতম সংগঠক এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক সন্তান হকের জীবনাদর্শ অনুসরণ করে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করলে সমাজ উপকৃত হবে, দেশ এগিয়ে যাবে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাউজান থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর চৌধুরী রাউজান থানা আওয়ামী লীগ-মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হকের আদর্শে দীক্ষিত হয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করার সংগ্রামে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

নোয়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কফিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ.কে ফজলুল হক আগাগোড়া একজন দেশপ্রেমিক মানুষ ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার কাজে দৃপ্তমান ছিলেন। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের তৃণমূল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রেরণাদাত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা কিরণ লাল আচার্য্য বলেন, অসম সাহসী, আদর্শিক দৃঢ় মনোবলের অধিকারী ফজলুল হক শুধু রাউজানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে অসংখ্য শেল্টার হাউজই তৈরী করেননি, সক্রিয়ভাবে জনযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। মদুনাঘাট অপারেশনে তিনি সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

তিনি বলেন, ফজলুল হক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৬ দফা ঘোষণা করা হলে রাউজানে তা প্রচার-প্রসারে ভূমিকা রাখতে গিয়ে তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদেরের নেতৃত্বে মুসলিম লীগের রোষানলে পড়েন। অসম্ভব সাহসিকতার সাথে তা মোকাবেলাও করেন।

শওকত বাঙালি বলেন,  বাবার সহযোদ্ধাদের মুখে শুনেছি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ৭৫ পরবর্তী সময়ে তিনি নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অসংখ্যবার কারাবরণও করেছেন শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক সন্তান ছিলেন বলে। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর তাঁর কবরের ফলক ভাঙার স্পর্ধা যারা দেখিয়েছে, ফলক লাগানো নিয়ে যারা রাজনীতি করছে, ভন্ডামি করছে অচিরেই তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।

মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রশাসন সক্রিয় করণে পশ্চিম গুজরায় রিলিফ কমিটির প্রধান হিসেবে তাঁকে দায়িত্ব দেয়া হয়। অত্যন্ত সফলতা ও দক্ষতার সাথে তিনি সে দায়িত্ব পালন করেন। শুধু তাই নয়। আমৃত্যু প্রগতিশীল আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন, আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছেন।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মঞ্জুর হোসাইন, সাবেক ছাত্রনেতা আবু সাদাত মো. সায়েম, এম.এন আবছার, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা সনেট চক্রবর্তী, আসাদুজ্জামান জেবিন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোরশেদ আলম বাবলু, সাজ্জাদুল মোস্তফা চৌধুরী, মো. রাসেল, হৃদয় হাসান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।