চট্টগ্রাম: অধিকাংশ মানুষের কথা চিন্তা না করে গুটি কয়েক মানুষের সুবিধাকে প্রধান্য দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা অপরাধ। যে শহরে ফুটপাত নেই সেখানে টানেল-ফ্লাইওভার নির্মাণ হবে সেটা ভাবাও যায় না।
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের পরিকল্পিত উন্নয়নে অগ্রাধিকার বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি জেরিনা হোসেন।
জেরিনা হোসেন বলেন,‘চট্টগ্রামকে নগরী বলা হলেও নগরীর কোন স্ট্যাটাস চট্টগ্রামের নেই। কোন রোড ম্যাপ না থাকলে নগর হবে না। একটি নগরীর উৎকর্ষতা থাকতে হবে। সেটা চট্টগ্রামে নেই। চট্টগ্রামের উন্নয়নে কোন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সংস্থা নেই। সিডিএ বাস্তবায়নকারী প্রকৌশল সংস্থা মাত্র। এখনো সিডিএতে টাউন প্ল্যানিং ও ম্যানেজমেন্টের কোন ব্যবস্থা নেই। ’
তিনি বলেন,‘ফ্লাইওভার দিয়ে গণপরিবহন চলাচল করে না। চলে প্রাইভেট কার। ফ্লাইওভার দিয়ে মাত্র এক দশমিক দুই শতাংশ মানুষ যাতায়াত করে। সারাবিশ্বে যেখানে প্রাইভেট যানবাহনকে অনুৎসাহিত করা করা হচ্ছে সেখানে আমাদের দেশে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাদের জন্য আবার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। ’
জেরিনা হোসেন বলেন,‘কোন নগরীর প্ল্যানিং সিস্টেম না থাকলে যার যা ইচ্ছে তা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলে। ক্ষমতা যার হাতে থাকে তার ইচ্ছে মতো হয়। এটা কোন নগরীতে হতে পারে না। ’
শাহরিয়ার খালেদ বলেন,‘নগরীতে যে জলাবদ্ধতা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট। পর্যাপ্ত ডাস্টবিনের অভাবে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় আবর্জনা কর্ণফুলী নদীতে ছড়িয়ে পড়ছে। দূষিত হচ্ছে নদী। মাছ মরে যাচ্ছে। বঙ্গোপসাগরেও প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে। ’
তিনি বলেন,‘খন্দকিয়া খাল ছাড়া সবগুলো খাল দখল ও ভরাট হয়ে গেছে। খাল খনন না করে সড়ক উচু করা হচ্ছে। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সড়ক ৮ ফুট উচু করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়। ’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারী ১২, ২০১৪