ঢাকা, বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জুলুস ফিরেছে, জনসমুদ্র মুরাদপুর-ষোলশহর এলাকা

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
জুলুস ফিরেছে, জনসমুদ্র মুরাদপুর-ষোলশহর এলাকা ছবি: সোহেল সরওয়ার / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: আওলাদে রাসূল আল্লামা তাহের শাহ মাদ্দাজিল্লুহুল আলীর নেতৃত্বে লাখো আশেকের অংশগ্রহণে সকালে শুরু হওয়া মিলাদুন্নবীর জুলুস ফিরেছে পশ্চিম ষোলশহরের আলমগীর খানকা-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়ায়। সেখানে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জুমার নামাজে অংশ নিতে আগে থেকেই অপেক্ষা করছে হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।

এর সঙ্গে জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা যুক্ত হওয়াতে এখন মুরাদপুর ও ষোলশহর এলাকা পরিণত হয়েছে জনসমু্দ্রে।

শুক্রবার সকাল পৌনে নয়টায় আনুষ্ঠানিকভাবে হুজুর কেবলার নেতৃত্বে শুরু হয় জুলুস।
হুজুর কেবলাকে বহনকারী সুসজ্জিত গাড়িতে ছিলেন ছাহেবজাদা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ হামেদ শাহ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী, পিএইচপি পরিবারের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং জুলুসের আয়োজক আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রতিবছরের মতো এবারও জুলুসকে ঘিরে জামেয়া মাদ্রাসার বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী, গাউছিয়া কমিটি, ইসলামী ছাত্রসেনা, তরিকতের বায়াতগ্রহণকারী নানা বয়সী মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। সবুজ পতাকা, পাগড়ি ও একই রঙের পাঞ্জাবি পড়ে তরুণরা অংশ নিয়েছেন জুলুসে। হামদ, নাত আর মারহাবা ধ্বনিতে মুখর করে রেখেছিল কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকা।

বিশাল জাতীয় পতাকা ও ফুল দিয়ে সাজানো হুজুরকেবলাকে বহনকারী বিশেষ গাড়িটি নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড়ে পৌঁছায় ১১টা ১০ মিনিটে। এরপর ভিড় ঠেলে সেটি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আসতে সময় লাগে ১০ মিনিটের বেশি।

জুলুসে অংশ নিতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে অনেকে দু-এক দিন আগেই নগরীতে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় উঠেছিলেন। তবে বেশিরভাগ ভক্তই বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, ট্রাক-মিনিট্রাক ভাড়া করে জৌলুসসহকারে আসেন জুলুসে। গাড়িগুলো রাখা হয়েছিল জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠ ও বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালে।      

জামালখান মোড়ে কথা হয় আবদুর রহিমের (৩০) সঙ্গে। তিনি এসেছিলেন রাউজান থেকে। বাংলানিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে সুন্নিয়তের বিজয়ের স্মারক এ জুলুস। আমার দাদা ছিলেন হজরত সিরিকোটি সাহেব হুজুরের মুরিদ। তাই বংশ পরম্পরায় আমাদের পরিবারের সব সদস্য প্রতিবছর জুলুসে অংশ নেন। অনেকে বিদেশ থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসেন জুলুসে অংশ নিতে। এটি আমাদের কাছে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহার চেয়েও বেশি খুশির দিন। ’ 

আওলাদে রাসূলকে একনজর দেখার জন্য রোডম্যাপ অনুযায়ী রাস্তার দুপাশে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষা করেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এর মধ্যে প্রচুর নারী যেমন ছিলেন তেমনি হিন্দু, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর লোকজনও ছিলেন। স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ভ্যানগাড়ি, মিনি ট্রাকে করে জুলুসে অংশগ্রহণকারীদের শরবত, জুস, আপেল, কমলা, বড়ই, জিলাপি-বন ইত্যাদি দিয়ে আপ্যায়ন করেন।

আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বাংলানিউজকে জানান, জুলুসকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষ যাতে জুমার নামাজে অংশ নিতে পারেন সে লক্ষ্যে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে।

পূর্বনির্ধারিত রোডম্যাপ অনুযায়ী জুলুসটি বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জারপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, চন্দনপুরা, দিদার মার্কেট, সিরাজুদৌলা সড়ক হয়ে আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, চেরাগি পাহাড়, জামালখান, গণি বেকারি প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চকবাজার, কাতালগঞ্জ, মুরাদপুর, বিবিরহাট হয়ে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আসবে। এরপর মাহফিল ও জুমার নামাজের পর মোনাজাত হবে।

জুলুসকে সামনে রেখে রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত হজরতুলহাজ আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ও আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ হামেদ শাহ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী চট্টগ্রাম পৌঁছেছিলেন বুধবার। ওই দিন বেলা ১টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে অবতরণ করেন তারা। এরপর মোটর শোভাযাত্রা সহকারে নগরীর ষোলশহর খানকাতে নিয়ে যাওয়া হয়।
   
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
এআর/টিসি


** লাখো আশেকের অংশগ্রহণে মিলাদুন্নবীর জুলুস শুরু
** আল্লামা তাহের শাহ চট্টগ্রামে, জুলুস শুক্রবার
** আল্লামা তাহের শাহ চট্টগ্রাম আসছেন

** মিলাদুন্নবী সরকারিভাবে উদযাপনের দাবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।