চট্টগ্রাম: কেউ এসেছেন নিজের গাড়ি হাকিয়ে, কেউ এসেছেন দ্বি-চক্র যানে চড়ে। আবার কারও ভরসা পাবলিক গাড়ি।
বলছিলাম বিজয় মেলার কথা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এসে এক হয়েছেন বিজয় মেলায়। ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষের সরব উপস্থিতি রয়েছে এই মেলায়। এ যেন মনে করিয়ে দেয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই চরণদ্বয় ‘গাহি সাম্যের গান, যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান’।
নগরীর কাজীর দেউড়ি আউটার স্টেডিয়ামে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চলছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। মাসব্যাপী বিজয় মেলার এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। আর তাই হাজারো মানুষের ভিড়ে মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণের দেখা গেছে এমন চিত্র।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন নিয়ে এসেছেন অনেকে। কম মূল্যে পছন্দের জিনিসটি বেছে নিতে ব্যস্ত ক্রেতারা। সেই সঙ্গে বিক্রেতারাও ব্যস্ত দরদামে।
মেলায় সুলভমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে গৃহসজ্জার নানা উপকরণ, বাঁশ ও বেতের জিনিষপত্র, ক্রোক্রারিজ সামগ্রী, বাচ্চাদের খেলনা, বাহারি শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, শাল, শীতের কাপড়, বিভিন্ন ধরনের গহনা, ছোটবড় ব্যাগ, জুতা, স্যান্ডেল, ইলেকট্রনিকস পণ্য, নানা ধরনের মুড়িমুড়কি, বাতাসা, বিভিন্ন স্বাদের মুখরোচক আচার। এছাড়া রান্নাঘরের তৈজসপত্র, দা-ছুরি-বঁটির পাশাপাশি হাঁড়ি-ঢাকনাসহ শীতের পিঠা তৈরির বিশেষ বাটিও বিক্রি হচ্ছে। আরও রয়েছে মাটির তৈরি তৈজসপত্রের দোকান।
পরিবার নিয়ে আগ্রাবাদ থেকে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ছুটির দিনে কিছুটা ঘুরাঘুরি করতেই মেলায় আসা। পরিবার নিয়ে কিছুটা সময় বেড়ানোও হয়, আবার পছন্দমতো যে কোন জিনিস কিনতে পারা যায়।
সিটিগেইট থেকে বন্ধুদের সঙ্গে মেলায় এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফাহিমা নিশি। তিনি বলেন, মেলা আমাদের সংস্কৃতির একটা অংশ। আমাদের ঐতিহ্যবাহী অনেক জিনিস মেলায় কিনতে পাওয়া যায়। এখানে যেমন অনেককিছু দেখার আছে, তেমনি শেখারও আছে অনেককিছু।
বিক্রেতারা জানান, মেলায় প্রধানত পণ্যের বিক্রির চেয়ে প্রচারের দিকে বেশি নজর দেয়া হয়। তাই পণ্যের ওপর ছাড় দিয়ে কম লাভে বিক্রি করা হয়। তবে মেলায় এবার প্রচুর লোক সমাগম হচ্ছে। তাই জিনিসপত্রের বিক্রিও ভাল হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন বৈরি আবহাওয়ার কারণে বেচাবিক্রি কম ছিল। তবে এখন আবার জমে উঠেছে। এছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে প্রচুর পরিমাণ বিক্রি হয় বলে জানান তারা।
মেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, মেলায় এবার ছোট-বড় মিলিয়ে ২১৫টি স্টল বসেছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চললেও ভিড় জমে মূলত বিকেল ও সন্ধ্যায়। মেলা চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
আইএসএ/টিসি