ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘স্বামীকে হারালাম, ফ্ল্যাটও হারালাম’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
‘স্বামীকে হারালাম, ফ্ল্যাটও হারালাম’ ‘অফিস গুটিয়ে নিয়ে উল্টো গোপনে অবিক্রীত ফ্ল্যাট ও ফ্লোর বিক্রির পাঁয়তারা করছে’

‘নগরীর জামালখানে কেয়ারী খান প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ হয়ে স্বামীকে হারালাম, ফ্ল্যাটও হারালাম। আমার কোনো ছেলে নেই। একমাত্র মেয়ে নিয়ে চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।’

চট্টগ্রাম: ‘নগরীর জামালখানে কেয়ারী খান প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ হয়ে স্বামীকে হারালাম, ফ্ল্যাটও হারালাম। আমার কোনো ছেলে নেই।

একমাত্র মেয়ে নিয়ে চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। ’

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন কেয়ারী খান প্রকল্পের ফ্ল্যাট ওনার পেট্রেশিয়া রড্রিকস।

তিনি বলেন, ২০০৬ সালে আমার স্বামী রেমন রড্রিকস ১৩ লাখ টাকা জমা দেন। চুক্তি ছিল ২০০৯ সালে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কেয়ারী কর্তৃপক্ষের কালক্ষেপণ, তালবাহানায় হতাশ হয়ে আমার স্বামী অকালে মৃত্যুবরণ করেন। কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে যে ফ্ল্যাট কিনেছেন সেটি দেখে যেতে পারেননি। শুধু রেমন রড্রিকস নন, মারা গেছেন আরেক ফ্ল্যাট ওনার রেমন প্রদীপ কুমার দাশও।

কেয়ারী খান ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্কুলশিক্ষিকা শুক্লা সাহা বলেন, প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন থাকে নিজের একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে। সেই স্বপ্ন থেকেই ২০০৬ সালে ফ্ল্যাট বুকিং দিয়েছিলাম কেয়ারী খানে। ১০ বছর পেরিয়ে গেল এখনো ফ্ল্যাট পাইনি। ১৮ তলা ভবন হওয়ার কথা ছিল এখনো ছয়তলার ছাদই হয়নি।   

মূল বক্তব্যে ফ্লাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হাসান মুরাদ বলেন, ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান কেয়ারী লিমিটেডের কেয়ারী খান প্রকল্পে মোট ৬০টি ফ্ল্যাট করার কথা ছিল। এর মধ্যে জমির মালিকের ২০টি, কেয়ারীর ৪০টি। ডেভেলপার এ পর্যন্ত ৩৫টি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছে, ফ্লোর ওনার আছে ৩৩ জন। অবিক্রীত আছে ৫টি ফ্ল্যাট ও ৪ হাজার ৪০০ বর্গফুটের একটি ফ্লোর।

তিনি বলেন, ২০০৬ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর গ্রেসফিরিওড ছিল ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত। কেয়ারী’র স্থানীয় অফিস চকবাজারের কেয়ারী ইলিশিয়ামের অফিসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা ফ্ল্যাট ওনারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে না, কাজও করছে না। প্রতিষ্ঠানটি রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ২৭ ধারা মোতাবেক চুক্তি অনুযায়ী চুক্তি ভঙ্গ এবং প্রতারণামূলক অপরাধ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আলমগীর, খালিদ মাহমুদ, সীমা তালুকদার, হেলেন রড্রিকস, বশির আহমদ প্রমুখ।

তাদের অভিযোগ, কেয়ারী লিমিটেড প্রকল্পের কাজ শেষ না করে চট্টগ্রাম থেকে অফিস গুটিয়ে নিয়ে উল্টো গোপনে অবিক্রীত ফ্ল্যাট ও ফ্লোর বিক্রির পাঁয়তারা করছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬

এআর/টিসি            

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।