ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লবণের দাম বৃদ্ধিতে চামড়া সংরক্ষণে শঙ্কায় আড়তদার

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২২
লবণের দাম বৃদ্ধিতে চামড়া সংরক্ষণে শঙ্কায় আড়তদার ...

চট্টগ্রাম: চামড়া সংরক্ষণের মূল উপাদান লবণ। কিন্তু হঠাৎ করেই লবণের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে চামড়া সংরক্ষণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন আড়তদাররা।

সময়মতো চামড়া সংরক্ষণ করা না গেলে চামড়ার গুণগতমান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অধিকাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

চট্টগ্রাম জেলা কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির অভিযোগ, লবণ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট পরিকল্পিতভাবে কোরবানির ঈদের আগে লবণের দাম বাড়িয়েছে।

এতে বৃহত্তর এ খাত ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন তারা।

আড়তদার সমিতির সহ সভাপতি আবদুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন,  এ বছর আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে তাতে কাঁচা চামড়া নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই। তবে লবণের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ফলে চামড়া সংরক্ষণে আমাদের খরচ বাড়ছে। ফলে সব খরচ মিলিয়ে চামড়ার দাম আরও বেড়ে যাচ্ছে। লবণের মিল মালিকদের সিন্ডিকেট প্রতিবছর এ সময়ে লবণের দাম বাড়িয়ে দেন।  

তিনি বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে যে চামড়া আসে তার সংরক্ষণ করতে প্রতিটি চামড়ার পেছনে ১৫-১৭ টাকা খরচ পড়ে। কিন্তু ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম ৪০-৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। লবণ-লেবার মিলিয়ে যে খরচ তা পুষিয়ে নিতে হলে এর চেয়ে কমদামে আমাদের কাঁচা চামড়া কিনতে হবে।  

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) নগরের আতুরার ডিপো চামড়ার আড়ত ঘুরে দেখা, ঈদে চামড়া সংরক্ষণ প্রক্রিয়া সামনে রেখে বিভিন্ন আড়তে কাজ করছেন শ্রমিকরা। চামড়া সংরক্ষণের জায়গা প্রস্তুতের পাশাপাশি লবণ মজুদ করছেন অনেকে।

আড়তদার সমিতির সূত্র অনুযায়ী, গত বছর চট্টগ্রামে ৩ লাখ ৪ হাজার ২৫০ পিস গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫০ পিস গরু ও মহিষ এবং ২৫ হাজার ২০০ পিস ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করা হয়। তবে এ বছর ৪ লাখ পিস চামড়া সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সংগঠনটির।

চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতি সাধারণ সম্পাদকের আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর আমাদের চার লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আশা করছি সব ঠিক থাকলে আমরা তা সংরক্ষণ করতে পারবো। তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যাতে বেশি লাভের আশায় অতিরিক্ত দামে চামড়া ক্রয় না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।  

তিনি বলেন, জেলার চামড়াগুলো যাতে নগরে আনা না হয় সে বিষয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করছি। কারণ, নগরের চামড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলা চামড়া শহরে নিয়ে আসলে তা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। চাহিদার তুলনায় চামড়া বেশি হলে তা অবিক্রীত থেকে যায়। এ ছাড়া দূরদূরান্ত থেকে চামড়া আসতে সময় লাগায় বেশিরভাগ চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চাহিদা থাকলেও আমরা তা কিনতে পারি না।

ট্যানারি ব্যবসায়ীদের কাছে বকেয়া

ট্যানারি ব্যবসায়ীদের কাছে বর্তমানে কোনো টাকা বকেয়া না থাকলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বকেয়া টাকা এখনও উদ্ধার করতে পারেননি আড়তদাররা। এখন পর্যন্ত ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে আটকে আছে প্রায় ৮ কোটি টাকার মতো৷ যদিও এর প্রভাব বর্তমান কাঁচা চামড়ার বাজারে পড়বে না বলে মনে করছেন আড়তদাররা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২২
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad