ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা, সিভাসুর রেজিস্ট্রারের ভূমিকায় অসন্তোষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২
কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা, সিভাসুর রেজিস্ট্রারের ভূমিকায় অসন্তোষ সিভাসু

চট্টগ্রাম: কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ক ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্বিবদ্যালয় (সিভাসু) কেন্দ্রে ২ হাজার পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

ভর্তি পরীক্ষার উপকমিটি গঠন, সম্মানী বণ্টন ও পরীক্ষায় ডিউটি বণ্টনকে কেন্দ্র করে সিভাসুর  শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।  

ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রতিবছরের মতো এ বছরও কিছু উপকমিটি গঠন করা হয়।

কিন্তু রেজিস্ট্রার মীর্জা ফারুক ইমামের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এবং সব কমিটিতে নিজের নাম দিয়ে বেশি সম্মানী নেওয়ার পাঁয়তারার ফলে অসন্তোষ দেখা দেয়।  

শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আপত্তির মুখে উপকমিটিগুলো পাঁচবারের বেশি সংশোধন করা হয়েছে। এ নিয়ে ভর্তি কমিটির একাধিক সভায় রেজিস্ট্রারকে ভর্ৎসনা করা হয় এবং একাধিক কমিটি থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হয়।  

সর্বশেষ ভর্তি পরীক্ষার হলে ডিউটি বণ্টনকে কেন্দ্র করে আবারও রেজিস্ট্রারের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে ফিশারিজ অনুষদের সহকারী অধ্যাপক আবরার শাকিলসহ কয়েকজন শিক্ষক কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানালে বুধবার দুপুরে তা সংশোধন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কাছে পাঠানো এক ইমেইলে উক্ত শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক বছর ধরে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এসব নোংরা খেলা শুরু হয়েছে রেজিস্ট্রারের কারণে। কমিটি গঠনের সময় তিনি নিজের নাম সব কমিটিতে ঢুকিয়ে দেন, কারণ যত কমিটি তত সম্মানী। এ ছাড়া তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ডিউটি লিস্ট করে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করে দেন। এটা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।

সিভাসুর রেজিস্ট্রার মীর্জা ফারুক ইমাম বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক ভর্তি সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি অনুসারে শিক্ষক ও কর্মকর্তা সমন্বয়ে মূল ভর্তি কমিটিসহ অন্যান্য সহায়ক উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটিতে কাজের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তাকে একটি বা দুইটি কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গঠিত কমিটি ইতোমধ্যে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পন্ন করেছে-এতে কোনো ধরনের অসন্তোষ পরিলক্ষিত হয়নি। পরীক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে বিভিন্ন কমিটি/উপ-কমিটি স্ব-স্ব কাজে দক্ষ শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে যাচাই-বাছাই পূর্বক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সব কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকেন। এক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার নিজস্ব ক্ষমতাবলে কোনো কিছু করার সুযোগ নেই। অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের স্বেচ্ছাচারিতা করারও কোনো অবকাশ নেই এবং কোনো কমিটিতে নিজের ইচ্ছায় রেজিস্ট্রারের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ নেই। কাজের স্বার্থে কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তাকে এক বা দুই কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি শুধু একটি সম্মানী প্রাপ্য হবেন। অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক এবং শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমন্বয়ে ৯ সদস্যের আসন ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি গঠন করা হয়। সবার সম্মতিক্রমে চূড়ান্ত তালিকা ৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয়।

সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আসলে এরকম কিছু অসন্তুষ্টির কথা আসে। আমি চাই সবাই যাতে এ কাজে সম্পৃক্ত হয়ে ভর্তি পরীক্ষা সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হোক। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানসিকতা। সবাইকে সুন্দর মানসিকতা সম্পন্ন হতে হবে৷ তবেই আমরা এসব অতিরিক্ত চাওয়া পাওয়া থেকে দূরে থাকতে পারব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।