ঢাকা, বুধবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২২ মে ২০২৪, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আদালতের পর্যবেক্ষণ: পুলিশের কারণে বিনাদোষে শিশুর কারাভোগ

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
আদালতের পর্যবেক্ষণ: পুলিশের কারণে বিনাদোষে শিশুর কারাভোগ প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম: মিথ্যা মামলা দায়ের, মিথ্যা পুলিশ রিপোর্ট দাখিল ও তার স্বপক্ষে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন পুলিশের দুই  উপপরিদর্শক (এসআই)। পুলিশের কারণে বিনাদোষে এক মাস ছয় দিন কারাগারে ছিল শিশু।

গত ৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের শিশু আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭, চট্টগ্রামে বিচারক ফেরদৌস আরা একটি মামলার রায় দেওয়ার সময় এই মামলার বিষয়ে একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার আরিফুল ইসলাম।

আদালতের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ২০১৯ সালে শিশুকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ।

তখন উদ্ধারকৃত সোনার বার দুটির একটি দাবি করে অভিযুক্ত শিশুকে ছেড়ে দেবার প্রস্তাব দেন পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু অভিযুক্ত শিশুর মা সোনার বারের বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শন করে। পুলিশ সদস্যদের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার অহেতুক বিলম্বে মামলাটি দাখিল করে। মামলার এজাহারকারী তার দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার সমর্থনে শপথ গ্রহণপূর্বক মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করেন।  

আদালত তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ডি.ডব্লিউ-২ কর্তৃক জব্দকৃত সোনার বারের কাগজপত্র উপস্থাপন করা সত্ত্বেও তা আমলে না নিয়ে এবং ঐ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রাজস্ব অফিস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ব্যতীতই এজাহারকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে দায়িত্ব জ্ঞানহীন এবং মিথ্যা দোষীপত্র দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। প্রকৃত সত্য জানা সত্ত্বেও মিথ্যা দোষীপত্রের স্বপক্ষে শপথ গ্রহণপূর্বক মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

মামলায় অভিযুক্ত শিশু সম্পূর্ণ নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল  তারিখ থেকে ১ মাস ৬ দিন জেল হাজতে আটক থাকার পর একই বছর ২৮ মে জামিন লাভ করে।

পর্যবেক্ষণে আদালত এজাহারকারী এসআই মো. আনোয়ার হোসেন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুবীর পালের বিরুদ্ধে মিথ্যা এজাহার দায়ের, মিথ্যা পুলিশ রিপোর্ট দাখিল এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে পেনাল কোডের ১৭৭, ১৮১, ১৯৩ ৫ ২১১ ধারায় মামলা দায়ের করার নির্দেশনা প্রদান করেন।

উক্ত নির্দেশনার আলোকে অভিযুক্ত শিশু মো. নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে শিশু মামলা ০৯/২০২০ এর এজাহারকারী এসআই মো. আনোয়ার হোসেন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুবীর পালের  বিরুদ্ধে মিথ্যা এজাহার দায়ের, মিথ্যা পুলিশ রিপোর্ট দাখিল এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় পেনাল কোডের ১৭৭, ১৮১ ১৯৩ ও ২১১ ধারার অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে অত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।