ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে জুনের নির্বাচনে তৃণমূলের অ্যাসিড টেস্ট

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫০ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১২

কলকাতা: আগামী ২০ মে তৃণমূল সরকারের এক বছর পূর্তি ৷আর তার কয়েকদিন বাদেই নতুন সরকারের প্রথম অ্যাসিড টেস্ট৷ জুনেই ৬টি পৌরসভার ভোট এবং দু’টি বিধানসভার উপ-নির্বাচন।

ক্ষমতায় আসার ঠিক ১ বছর বাদে এই ভোটের মধ্য দিয়েই আম-জনতার অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছেন মমতা এবং তার দল তৃণমূল৷ এই ভোটের ফলাফল সরকারের স্থায়িত্বের ওপর কোনো প্রভাব না ফেললেও, এর তাৎপর্য রাজনৈতিকভাবে সুদুরপ্রসারী৷ কারণ, বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল৷

কিন্তু, বিশেষভাবে উল্লেখ্য এই পৌরভোট জোটহীন লড়াই হচ্ছে৷ মুখোমুখি দুই শরিক কংগ্রেস-তৃণমূল৷ ফলে জোট ছাড়া তৃণমূল কেমন ফল করে, কংগ্রেসেরই বা ফল কেমন হয়, তার দিকে তাকিয়ে আছেন সবাই৷

বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আসা মমতা ব্যানার্জি সরকারের জনপ্রিয়তা, এক বছর পরও কি একই রকম আছে? বেড়েছে? নাকি, তাতে ভাটার টান? তারও পরীক্ষা হবে পৌরভোট ও বিধানসভা উপ-নির্বাচনে৷

ক্ষমতায় আসার ৬ মাসের মধ্যে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র এবং ভবানীপুর ও বসিরহাট বিধানসভা উপ-নির্বাচন হয়৷ তাতে বিপুলভাবে জয়ী হয় তৃণমূল৷

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, প্রথম ৬ মাস কোনো সরকারের ‘হানিমুন পিরিয়ড’ বলেই পরিচিত? তাই এই সময়ের মধ্যে কোনো নির্বাচনী ফলাফল, সরকারের জনপ্রিয়তা কমা বা বাড়ার মাপকাঠি হতে পারে না৷

কিন্তু, এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর একটা সরকারের কাজকর্মের ভালমন্দ বিচার করেই মানুষ রায় দেয়৷ বিশেষ করে এমন একটা প্রেক্ষাপটে এই নির্বাচন হচ্ছে, যখন নানা ইস্যুতে বিরোধীদের কড়া সমালোচনার মুখে সরকার৷

কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের মধ্যে টানাপোড়েন৷ এমনকি, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে চলে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও৷ ফলে, এই পরিস্থিতিতে এই জোড়া ভোটের ফলাফলের ভিন্ন তাৎপর্য আছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷

যে ৬টি পৌরসভায় ভোট হচ্ছে তার মধ্যে দুর্গাপুর-হলদিয়া-ধুপগুড়ি বামেদের হাতে রয়েছে৷ পাঁশকুড়া-নলহাটি কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের দখলে৷ কুপার্স পুরসভা কংগ্রেসের একার দখলে৷  

গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে, এই ৬টি পৌরসভা কোনওটাতেই বামেরা জেতার জায়গায় নেই৷ তার ওপর, হলদিয়ার একদা ডাকসাইটে নেতা লক্ষ্মণ শেঠ এখন জেলে৷ যার ফলে, সিপিএম এখন হলদিয়ায় অত্যন্ত দুর্বল৷ তুলনায় দুর্গাপুর ও ধুপগুড়িতে সিপিএমের অবস্থা কিছুটা ভাল৷

এখন দেখার, বামেরা নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে পারবে, না কি সরকারের এক বছরের কাজকে হাতিয়ার করে বিরোধীদের হাতে থাকা পৌরসভাগুলি ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হবে তৃণমূল৷

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, তৃণমূল যদি জোট ছাড়াই ২টি বিধানসভা ধরে রাখতে পারে এবং পৌরভোটেও আগের চেয়ে ভালো করে তাহলে তৃণমূলের মনোবল আরও বাড়বে৷ অন্যথায় একটু চাপের মুখেই পড়বে সরকার৷

পঞ্চায়েত ভোটের আগে কিছুটা চাঙ্গা হবে বিরোধীরা৷ আর বিরোধীদের ফল গতবারের চেয়েও খারাপ হলে, আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে তারা৷

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।