ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

চিদাম্বরম-জেটলি উত্তপ্ত বাদানুবাদ রাজ্যসভায়

নয়াদিল্লি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৯ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১২

নয়াদিল্লি: এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তিতে পি চিদাম্বরমের পরিবারের যোগাযোগকে ঘিরে বিতর্কে ফের উত্তাল হল সংসদ। সোমবার রাজ্যসভায় এ বিষয়ে প্রশ্নোত্তরের শুরুতে তার পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর কোনওরকম যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।



এরপরই ওই ইস্যুতে একের পর এক প্রশ্ন তুলে ক্রমশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অস্বস্তিতে ফেলে দেন বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি। একসময় এই বিতর্কের জেরে প্রবল তরজা শুরু হয় ট্রেজারি ও বিরোধী বেঞ্চের সাংসদদের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত দু’টো অবধি সংসদ মুলতবি রাখার নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ।

গত ২৬ এপ্রিল জনতা পার্টির সভাপতি সুব্রহ্ম্যণম স্বামীর তরফে অভিযোগ তোলা হয়, ২০০৬ সালে মোবাইল পরিষেবা সংস্থা এয়ারসেলের সঙ্গে ম্যাক্সিসের চুক্তিতে আর্থিকভাবে উপকৃত হয়েছিলেন তত্‍কালীন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের ছেলে কার্তি।

অভিযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ উন্নয়ন পর্ষদের সায় ছাড়া শিবশঙ্করণের মালিকানাধীন এয়ারসেল সংস্থার শেয়ার কিনতে পারতেন না মালয়েশিয়ার সংস্থা ম্যাক্সিসের কর্ণধার, অনাবাসী ভারতীয় ব্যবসায়ী আনন্দকৃষ্ণণ।

অভিযোগকারী পক্ষের দাবি, অনুমতির বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন তত্‍কালীন অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম। এরপর এয়ারসেলের বেশ কিছু শেয়ার `অসব্রিজ হোল্ডিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস` নামে একটি কোম্পানি কিনে নেয়। যার আর্থিক মূল্য কয়েকশ’ কোটি টাকা। আর এই `অসব্রিজ হোল্ডিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস` নামক কোম্পানিটির ৯৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক চিদাম্বরমের ছেলে কার্তি।

তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে কার্তি-র সংস্থা এয়ারসেল শেয়ার হাতে পাওয়ার পরেই ম্যাক্সিস গোষ্ঠী এয়ারসেলের সিংহভাগ শেয়ার কেনায় অনুমতি পেয়ে যায়।

এয়ারসেল-ম্যাক্সিস `ডিল` নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে এরইমধ্যেই ডিএমকে সাংসদ তথা প্রথম ইউপিএ সরকারের টেলিকমমন্ত্রী দয়ানিধি মারানের নামে মামলা করেছে সিবিআই।

অভিযোগ ওঠে, শিবশঙ্করণের উপর চাপ সৃষ্টি করে এয়ারসেলের শেয়ার বিক্রিতে বাধ্য করেছিলেন মারান। ম্যাক্সিসকে শেয়ার বিক্রির আগে টেলি-যোগাযোগ মন্ত্রকের ছাড়পত্র পাওয়া সত্ত্বেও বিভাগীয় মন্ত্রী দয়ানিধি মারানের কাছ থেকে ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাননি শিবশঙ্করণ।

কিন্তু আনন্দকৃষ্ণণকে স্বত্ত্ব বিক্রির এক মাসের মধ্যেই সেই অনুমতি মিলে যায়। আর এই ঘটনার পরেই মারানের পারিবারিক সংস্থা সান টিভিতে ৫৯৯ কোটি টাকা লগ্নি করেন আনন্দকৃষ্ণণ। শিবশঙ্করণ নিজেই এই চাপ তৈরির কথা প্রকাশ্যে আনার পর ২০১১ সালের জুলাই মাসে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের বস্ত্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন দয়ানিধি মারান।

বিজেপি`র অভিযোগ মারানের পাশাপাশি এয়ারসেল-ম্যাক্সিস ডিল থেকে আর্থিকভাবে উপকৃত হয়েছেন চিদাম্বরমও। এদিন বিজেপির রাজ্যসভার নেতার কটাক্ষের জবাবে চিদাম্বরম তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের সততা নিয়ে কোনও প্রশ্ন না তোলার উপদেশ দেন বিরোধী সাংসদের।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।