ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বিএসএফ গেট না খোলায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন গৃহবধূ

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১২

কলকাতা : বিএসএফের জওয়ারদের অমানবিক আচরণের শিকার হয়ে বিনা চিকিৎসায় মালদা জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কালিয়াচক থানার দুইশত দিঘি গ্রামের জুলি বিবি(১৯) নামের সদ্যবিবাহিত এক গৃহবধূ মারা গেছেন।

মালদা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে গ্রামটি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে অবস্থিত।

এখানে ১৫৫টি পরিবার বাস করে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই গ্রামের বাসিন্দাদের কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে আসতে হয়। গেট সব সময় খোলা থাকে না। সারাদিনে ৩ বার গেট খোলা হয়। সকাল ৬টা থেকে ৮টা, বেলা ১০টা থেকে ১২টা ও বিকাল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত গেট খোলা হয়। এরপরই গেট বন্ধ করে দেয় বিএসএফ। গ্রামে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিএসএফের দয়ার ওপরই নির্ভর করতে হয় পরিবারগুলোকে।

পুলিশ ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানায়, রোববার গভীর রাতে বুকের ব্যথায় কাতর জুলি বিবিকে তার পরিবারের সদস্যরা মালদা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসছিলেন। ওই দিন রাতে গেট খোলার জন্য তারা জওয়ানদের কাছে অনুরোধ করেন। কিন্তু অনুরোধে সাড়া দেয়নি বিএসএফ। গেটের কাছে ঘণ্টা দুয়েক পড়ের থাকার পর বিনা চিকিৎসায় জুলির মৃত্যু ঘটে।

সোমাবার দিবাগত রাত আড়াইটা নাগাদ গ্রামের সব মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করতে থাকলে ক্যাম্পের একজন অফিসার গেট খুলে দেন। ততক্ষণে জুলি বিবি মারা গেছেন।

এ ঘটনায় সোমবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করতে থাকেন বিএসএফ ক্যাম্প ঘিরে। কালিয়াচক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে। জওয়ানদের বিরুদ্ধ গেট না খোলার জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মৃতার স্বামী রাজ্জাক শেখ।

রাজ্জাক শেখ বলেন, ‘আমরা দুই ঘণ্টা ধরে চিৎকার করতে থাকি। তাদের অনুরোধ করি গেট খোলার জন্য। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেননি।

কালিয়াচকের সিপিএমের সাবেক বিধায়ক বিশ্বনাথ ঘোষ এ ঘটনায় বিএসএফকে দায়ী করে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত ও মৃতের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন।

জেলার মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেছেন, ‘বিএসএফ এ কাজটা ঠিক করে নি। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। ’

জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল জানিয়েছেন, ঘটনাটি সত্যি। জওয়ানরা গেট না খোলায় মৃত্যু ঘটেছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
এদিকে যাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ সেই বিএসএফের ১২৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের ডেপুটি কমান্ড্যান্ট প্রণয় কুমার বলেছেন, ‘আমাদের কোনো দোষ নেই। আমরা ওই নারীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করছিলাম। কিন্তু ততক্ষণে ওই নারী মারা যান। ’

দেরিতে গেট খোলার অভিযোগ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও তিনি বলেন, ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক।

বাংলাদেশ সময় : ১৪০২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১২
আরডি / সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।