ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

৬টি পৌরসভার ভোটের ফলে বামফ্রন্টের জনসর্মথন সামান্য বেড়েছে

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১২

কলকাতা : ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের হাওয়ায় বিপর্যস্ত বামফ্রন্ট ৬টি পৌরসভার নির্বাচনের নিরিখে সামান্য জনসমর্থন বাড়াতে পেরেছে।

দেখা যাচ্ছে, ২০‍১১ বিধানসভা নির্বাচনে এই ৬টি পৌরসভায় ১২৯টি ওয়ার্ডের মোট ৩৬টি ওয়ার্ডে জিতেছিল বামফ্রন্ট।

এবার  ৬টি পৌরসভায় ৩৮টি ওয়ার্ড জিতেছে তারা। এক্ষেত্রে তাদের ওয়ার্ড বেড়েছে ২টি।

অন্যদিকে, বিধানসভা ভোটে ৬টি পৌরসভার এলাকায় কংগ্রেস-তৃণমূল জোট জিতেছিল ৯৪টি ওয়ার্ডে। এবার জোট হয়নি কংগ্রেস ও তৃণমূলের। তৃণমূল মোট ৭২টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে। কংগ্রেস জিতেছে ১৫টি ওয়ার্ডে। কংগ্রেস ও তৃণমূলের মোট ওয়ার্ড কমেছে ৭টি।
ওয়ার্ডগুলো বিজেপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দখলে গেছে।

অবশ্য, ২০০৭ সালের ৬টি পৌরসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ৭৮টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল। তৃণমূল ২০টি ও কংগ্রেস ২৮টি ওয়ার্ডে জিতেছিল।

২০০৭ সালকে ধরলে কংগ্রেসের ওয়ার্ড সংখ্যা কমলেও তৃণমূলের ওয়ার্ড সংখ্যা বেড়েছে ৬টি পৌরসভা এলাকায়। অবশ্য নলহাটি, কুপার্স ক্যাম্পসহ বেশ কয়েকটি পৌরসভায় কংগ্রেসের হয়ে বিজয়ী কয়েকজন কাউন্সিলর পরে তৃণমূলে চলে যান।

আবার, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় হলদিয়া পৌরসভায় শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে বামফ্রন্টের। বিধানসভা ভোটের ঠিক উল্টো ফল হয়েছে এখানে। বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহা ১৫টি ওর্য়াডে জিতলেও, এবার তারা পেল ১১টি। বামেদের লিড ছিল ১১টি ওয়ার্ডে। এবার ১৫টি ওয়ার্ডে জিতেছে বামফ্রন্ট। এবার তৃণমূল ১১টি ওয়ার্ডে জিতেছে।

পাঁশকুড়া পৌরসভায় বিধানসভার তুলনায় শক্তি বেড়েছে তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটে পশ্চিম পাঁশকুড়া কেন্দ্রের কংগ্রেস সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী ওমর আলির ১১টি ওয়ার্ডে লিড ছিল। এবার ১২টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল। বামফ্রন্ট ৬টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল। এবার ৫টি ওয়ার্ডে জিতেছে তারা।

দুর্গাপুর পৌরসভায় হারলেও বিধানসভা ভোটের তুলনায় বামফ্রন্টের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। বিধানসভা ভোটে তারা এগিয়ে ছিল ১০টি ওয়ার্ডে। এবার ১১টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে তারা। অন্যদিকে, বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব মুখোপাধ্যায় এগিয়ে ছিলেন ৩৩টি ওয়ার্ডে। এবার ২৯টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল। ১টি ওয়ার্ডে জিতেছে কংগ্রেস।

তবে বামফ্রন্টকে চিন্তায় ফেলেছে ধূপগুড়ি পৌরসভার ফল। বিধানসভা ভোটে ধূপগুড়িতে ৮টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থীর তুলনায় এগিয়ে ছিলেন বিজয়ী সিপিএম প্রার্থী মন্মথ রায়। এবার তারা জিতেছে মাত্র ৪টি ওয়ার্ডে।

অন্যদিকে, শাসক দল তৃণমূল আশাতীত সাফল্য পেয়েছে এই পৌরসভায়। ১১টি ওয়ার্ডে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। যেখানে বিধানসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূল যৌথভাবে লড়ে এগিয়েছিল ৮টি ওয়ার্ডে।

বিধানসভা ভোটের তুলনায় নলহাটিতে খারাপ ফল করেছে কংগ্রেস। এখানে সংখ্যার বিচারে প্রথম তৃণমূল। যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস।

২০১১ সালের তুলনায় কংগ্রেসের ফলাফল নিরাশাজনক। বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের প্রার্থী, ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিৎ মুখার্জি এগিয়ে ছিলেন ১৫টি ওয়ার্ডে। বামফ্রন্ট এগিয়ে ছিল ১টি ওয়ার্ডে। এবার তারা ৩টি ওয়ার্ডে জিতেছে। কংগ্রেসও ৩টি ওয়ার্ডে জিতেছে। ৮টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

নদিয়ার কুপার্স ক্যাম্পে বিধানসভা ভোটের তুলনায় বামফ্রন্টের শক্তিবৃদ্ধি হয়নি। এখানে আবার অপ্রত্যাশিত ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল।

২০১১ সালে রাণাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কুপার্স ক্যাম্পের ১২টি ওয়ার্ডেই এগিয়ে ছিল কংগ্রেস সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী আবির বিশ্বাস। এবার একা লড়াই করে কংগ্রেস জিতেছে ১১টি ওয়ার্ডে। মাত্র ১টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল। একমাত্র এই পৌরসভাতেই বামফ্রন্ট একটি ওয়ার্ডেও জেতেনি।

বাংলাদেশ সময় : ১৪০৫ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।