ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মোর্চার দাবি না মেনে ৫টি মৌজাকে জিটিএতে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১২

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলার পার্বত্য অঞ্চলে প্রস্তাবিত জিটিএ এলাকায় সংযুক্তির জন্য গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ৩৯৮টি মৌজার দাবি খারিজ করল এই বিষয়ে গঠিত হাইপাওয়ার কমিটি।

শনিবার মহাকরণে মুখ্যসচিব সমর ঘোষ জানান, সাবেক বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বাধীন হাইপাওয়ার কমিটি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দাবির মধ্যে থেকে মাত্র পাঁচটি মৌজাকে জিটিএ এলাকায় অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করে।

এর মধ্যে জলপাইগুড়ির দুটি ও দার্জিলিংয়ের তিনটি মৌজা রয়েছে। রাজ্য সরকার কমিটির এই সুপারিশ মেনে নিচ্ছে।

মুখ্যসচিব আরও বলেন, মোর্চার দাবি অনুযায়ী জলপাইগুড়ির ১৯৮টি মৌজার মধ্যে মাত্র দুটি এবং দার্জিংয়ের তিনটি মৌজা সব শর্ত পূরণ করছে। হাইপাওয়ার কমিটি এই পাঁচটি মৌজাকে বর্তমান জিটিএ এলাকার সঙ্গে সংযুক্তির প্রস্তাব করেছে।

এদিকে মহাকরণে সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ কমিটির, সরকারের নয়। তাই এতে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই।

তিনি বলেন, ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে স্থির হয়েছিল কমিটির সুপারিশ মেনে চলা হবে। তাই সবাইকেই কমিটির রিপোর্ট মেনে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

অন্যদিকে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এই বিষয়টি মেনে নেবে না বলে জানিয়েছে। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানিয়েছেন, এই সুপারিশের বিরোধিতা করে তারা আন্দোলনে সামিল হবেন।

অন্যদিকে জিটিএর বিরোধিতাকারি আদিবাসী বিকাশ পরিষদের পক্ষ থেকে এই সুপারিশকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

জিটিএ এলাকায় ৩৯৮টি মৌজার অন্তর্ভুক্তির জন্য দাবি জানিয়েছিল মোর্চা। সেই দাবি খতিয়ে দেখার জন্য উচ্চপর্যায়ের কমিটি তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে।

প্রথমত, সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫০ শতাংশ গোর্খা জনগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস রয়েছে কিনা। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট এলাকার যোগাযোগের মাধ্যম ও বাস্তব পরিস্থিতি কী? তৃতীয়ত, ওই এলাকার মানুষের চাহিদা ও বক্তব্য কী?

এই তিনটি বিষয় খতিয়ে দেখে উচ্চপর্যায়ের কমিটি পাঁচটি মৌজাকে জিটিএর অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।

কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, দার্জিলিংয়ের এমএম তরাই, পূর্ব কড়াইবাড়ি ও গুলমাখারি এবং জলপাইগুড়ির সামসিং ও চালৌনি, এই পাঁচটি মৌজাকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, আটের দশকে পাহাড়ে জিএনএলএফের নেতা সুবাস ঘিসিংয়ের আন্দোলনের পর গড়া হয় দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল।

এরপর মোর্চা নেতা বিমল গুরুংয়ের আন্দোলনের ফল হিসেবে গড়া গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে অবশ্য তার চেয়ে বাড়তি কিছু ক্ষমতা দিয়েছে রাজ্য সরকার। গত বছরে ১৮ জুলাই জিটিএ নিয়ে কেন্দ্র, রাজ্য ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষরিত হয়।

জিটিএ এলাকায় আরও বেশ কিছু মৌজা অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সাবেক বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে একটি হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়। সব পক্ষই এই কমিটির সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য থাকবে লিখিত চুক্তি সাক্ষরিত হয়।

প্রায় এক বছর ধরে কমিটি ৫০শতাংশের বেশি গোর্খা অধিবাসি, নিরবিচ্ছিন্নতা প্রভৃতি বিষয়কে মাথায় রেখে বিচার বিবেচনা করে শুক্রবার এই কমিটি তার রির্পোট রাজ্য
সরকারকে পেশ করে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।