ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন একটি জটিল প্রক্রিয়া

রক্তিম দাশ. ব্যুরো চিফ. কলকাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৭ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১২

কলকাতা: ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন একটি জটিল প্রক্রিয়া বলেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলে থাকেন। এই নির্বাচন প্রতি ৫ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়।



এই পদটিকে বলা হয় একটি অরাজনৈতিক পদ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হলেও, নির্বাচনের পর যিনি নির্বাচিত হন তিনি আর কোনো দলের প্রতিনিদ্ধত্ব করতে পারেন না।

সাধারণত দেখা যায় যারাই ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তার পরবর্তী আর দলীয় রাজনীতিতে ফিরে আসেন নি। একপ্রকার রাজনৈতিক নির্বাসনে চলে গেছেন।


ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ইতিহাসে কখন সর্বসম্মত, আবার কখনও বা নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে ভারতের সাধারণ নাগরিকরা সরাসরি ভোট দিতে পারেন না। তাদের বদলে এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকারি রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত বিধায়করা, লোকসভার সাংসদ ও রাজ্যসভার সাংসদরা।

এবার ভোট পদ্ধতি দেখা যাক। ভারতের কোনো একটি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে ওই রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচিত বিধায়কদের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। এরপর ওই ভাগফলকে আবার ১০০০ দিয়ে ভাগ করা হয়। যে ভাগফল পাওয়া যায় তা ওই রাজ্য বা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের বিধায়কদের (প্রতি ১ জনের) মোট ভোট মূল্য ধরা হয়। যদি ভাগশেষ থাকে সেক্ষেত্রে ভাগফলের সঙ্গে ১ যোগ করে বিধায়কের ভোট মূল্য বার করা হয়।

এরপর সব বিধায়কদের ভোট মূল্য যোগ করে রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ভোট মূল্য বার করা হয়।

এরপর ভারতের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভোট মূল্য যোগ করা হয়। তারপর লোকসভা ও রাজ্যসভার মোট সাংসদের সংখ্যা দিয়ে ওই যোগফলকে ভাগ করা হয়। এই ভাগফল থেকে প্রতিটি সাংসদের ভোট মূল্য পাওয়া যায়। যদি ভাগশেষ ভাজক সংখ্যার অর্ধেকের বেশি হয়, তখন আগের ভাগফলের সঙ্গে ১ যোগ করে সাংসদের ভোট মূল্য বার করা হয়।


এবার ভোট গণনা- সব ভোট মূল্য যা হল, তার অর্ধেকের সঙ্গে ১ যোগ করলে যেটা হয় সেটা যিনি পান তিনিই ভারতের রাষ্ট্রপতি রূপে নির্বাচিত হন।

ভারতের ১৩তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য ইউপিএ প্রার্থী প্রণব মুখার্জি বা এনডিএ প্রার্থী পি এ সাংমার প্রয়োজন সব মিলিয়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার ভোট। এর মধ্যে প্রণব মুখার্জি এই দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে তার আর প্রয়োজন মাত্র ১ লাখ ৪৬ হাজার ভোট।

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথম নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজেন্দ্র প্রসাদ ২৬ জানুয়ারি ১৯৫০ শে। এই পদে ৩ জন মুসলমান যথাক্রমে ড. জাকির হোসেন(১৯৬৭), ড.ফকিরুদ্দিন আলি আহমেদ (১৯৭৪) ও বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালাম (২০০২) নির্বাচিত হয়েছিলেন। শিখ ধর্মের হয়েছিলেন একজন। এনি হলেন জ্ঞানী জৈল সিং(১৯৮২)। আর নারী একজনই প্রতিভা পাটিল ( ২০০৭)।


এই ১২ জন রাষ্ট্রপতির মধ্যে একজন বাঙালি, খ্রীর্স্টান বা আদিবাসী হননি। প্রণব মুখার্জি নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন প্রথম বাঙালি। অপর দিকে পি এ সাংমা হলে তিনি হবেন  খ্রীর্ষ্টান ধর্ম ও আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে আসা প্রথম রাষ্ট্রপতি।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: শাফিক নেওয়াজ সোহান, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।