ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১২

কলকাতা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভারত-বাংলাদেশকে রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ করে গেছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতার বাংলা একাডেমীতে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভার বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।



বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্টানে মূল আলোচক ছিলেন বাংলা একাডেমীর সভাপতি ও এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখনে- পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমীর সভাপতি ও বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আকাশবাণীর সংবাদ বিচিত্রার শব্দসৈনিক উপেন তরফদার ও বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের সদস্য শেখ হাফিজুর রহমান।

আনিসুজ্জামান বলেন, “পাকিস্তান কাঠামোর মধ্যে পূর্ব বাংলার মানুষের ভাষা সমস্যার সমাধান হবে না- এটা বুঝতে পেরেই সেদিন বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ” – এসব কথাই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন, “বাংলা ভাগে বঙ্গবন্ধু আঘাত পেয়েছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল, একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রর্বতন। ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এই পাকিস্তানি কাঠামোর মধ্যে মানুষের মুক্তি আসবে না। ”

উপেন তরফদার বলেন, “আমার কর্মজীবনে মুক্তিযুদ্ধ এক অন্যতম অধ্যায়। আমি ভাবি, কেমন করে জড়িয়ে পড়লাম! শুধু কী অফিসের দায়িত্ব পালন? তা নয়। আমরা আবেগপ্রবণ। দেশভাগের মূল্য আমরা সবচেয়ে বেশি দিয়েছি। তাই ওপারে যেকোন ঘটনায় আমাদের অনুরণিত করত। ”

তিনি বলেন, “অনেক বলেন, কী লাভ হল যুদ্ধ করে? ওরা (বাংলাদেশ) আমাদের অবদান স্বীকার করে না। আবার অনেকে বলেন, ভারত নিজের স্বার্থে যুদ্ধ করেছে। এ কথাগুলো আমায় আঘাত দেয়। আমরা মানবতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। লাভের আশায় করিনি। মুক্তি বাহিনী আর ভারতীয় বাহিনী একসাথে যুদ্ধ না করলে এ মানবতার যুদ্ধে আমাদের জয় আসতো না। এটা রক্তের বন্ধনের জন্য হয়েছিল। আর এই রক্তের বন্ধনে দুই দেশকে আবদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ”

শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, “ভারত স্বার্থের জন্য লড়াই করেনি। মানবতার জন্য করেছে। আমি কলকাতার এমন অনেক পরিবারকে জানি, যারা শুধু আশ্রয় দেননি, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর শরণার্থীদের দেশে ফেরার জন্য বাসের, ট্রেনের টিকিটের ভাড়াও দিয়েছিলেন। ”

শাঁওলি মিত্র বলেন, “আমার বাবা শম্ভু মিত্র ও মা তৃপ্তি মিত্র ওই সময় যুক্ত ছিলেন। যুদ্ধের পরে কলকাতার রাজভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর মা বলেছিলেন, আপনি বাংলাদেশ নামটি নিয়ে নিলেন, আমরা এবার কী করব? তিনি হেসে বলেছিলেন, তোমরা
কী করবা ঠিক করে আমারে জানাও। ”

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।