কলকাতা: সম্প্রতি ভারতে স্বেচ্ছানির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন বাংলা ভাষার অন্যতম সেরা সাহিত্যিক ও ভারতের জাতীয় সাহিত্য আকাদেমীর সভাপতি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে টুইটারে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন।
তার এই অভিযোগ নিয়ে এখন কলকাতার সাহিত্যমহলে তোলপাড় চলছে।
বুধবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতায় বাংলানিউজকে বলেন, “আমি এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কে টুইটারে কী লিখছেন, কে কী কোথায় বলছেন তা আমি গ্রাহ্য করি না। আমি আমার কাজ করে যাচ্ছি। ”
এর আগে মঙ্গলবার এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত প্রবীণ এই সাহিত্যিক বলেছিলেন, ``তসলিমা তো আমায় একসময় ভক্তি-শ্রদ্ধা করত। যে যৌন নির্যাতনের কথা বলা হচ্ছে, তা কী সাম্প্রতিক ঘটনা? যদি তা না হয়, তাহলে এতদিন বলেনি কেন?”
বিগত বাম আমলে তসলিমার বই নিষিদ্ধ করার বা কলকাতায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বলেন, “ওর বই নিষিদ্ধ করা বা ওকে তথাকথিত বাংলাছাড়া করার নেপথ্যে আমার কোনো হাত নেই। আমি অত ক্ষমতাধর নই। এসব মন্তব্য বা অভিযোগ নিয়ে আদৌ বিচলিত নই। আমি একটা নির্দিষ্ট নীতিতে চলি। সেই নীতিতে অনড় থাকি। ”
সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী বলেছেন, “গোটা অধ্যায়টাই খুব দুঃখজনক। দুজনেই নামী লেখক। তাদের মধ্যে প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি একবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। ”
কবি কৃষ্ণা বসু বলেছেন, “তসলিমা সবসময় মানুষকে বিস্মিত, হতচকিত করার জন্য এমন সব মন্তব্য করে থাকেন। এর মধ্য দিয়ে তার বিজ্ঞাপিত হওয়ার মানসিকতা কাজ করে। ”
কলকাতার সাহিত্যমহলের সংশ্লিষ্টদের ধারণা, তসলিমা নাসরিন খুব দ্রুত তার বন্ধু হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ থেকে চলে আসার পর কলকাতায় একদা যারা তার সবচেয়ে আপনজন ছিলেন তারা এখন পর হয়ে গেছেন। বিভিন্ন সময়ে তার মন্তব্যের জন্য।
এর সত্যতা থাকলেও যাদের বিরুদ্ধে তিনি এধরনের মন্তব্য করছেন তাদের দুই বাংলায় বিপুল জনপ্রিয়তা ও পাঠকমহলে বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে, অথচ তাকে ক্রমশ অজনপ্রিয় করে তুলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর [email protected]