ঢাকা, বুধবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৭

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

জেলে বসেই স্নাতকের স্বপ্ন দেখছে বন্দনা

আগরতলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:২১, মার্চ ২৮, ২০১৪
জেলে বসেই স্নাতকের স্বপ্ন দেখছে বন্দনা

আগরতলা (ত্রিপুরা) :  জেলে বসেই স্নাতক হবার স্বপ্ন দেখছে বন্দনা। জেলের চার দেয়ালের মধ্যেই চলছে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাবার স্বপ্ন বোনার পালা।

জীবনের অতীত স্মৃতিকে ভুলে গিয়ে এক নতুন স্বপ্নে মশগুল বন্দনা।

জীবনে একটা সময় কিছু ভুল হয়েছে তা বলে হতাশায় ডুবে থাকা কেন? তার জন্য সারা জীবন নষ্ট করা কেন? এই বোধ থেকেই এগিয়ে যাচ্ছে বন্দনা।

দমবার পাত্রী নয় সে ৷‌ জেলে বসেই একে একে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছে সে। ‌ এখানেই থেমে নেই উদ্যম। ‌ এবার পরীক্ষা দিচ্ছে স্নাতক হওয়ার জন্য। গ্র্যাজুয়েট হতে চায় বন্দনা।

তার সঙ্গীরা সবাই যখন সংশোধনাগারের বাঁধাধরা রুটিনে দিন কাটাচ্ছে, বন্দনা সারাক্ষণ ব্যস্ত বই নিয়ে। ‌ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দনা ও বেবি দুই বোন৷‌ এর মধ্যে বন্দনা ছোট৷‌

সংশোধনাগারের সুপার সুবোধ সরকারও খুশি কোনও বন্দির এ ধরনের উদ্যোগ দেখে৷‌ তিনি জানান, সংশোধনাগার থেকে সবাই জীবনের নতুন দিশা খুঁজে বের করুক, আমরা এটাই চাই৷‌

সংশোধনাগারের পরিবেশে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে কোন রকম প্রতিবন্ধকতা নেই৷‌ সঙ্গীরা যারা লেখাপড়া জানে, যারা লেখাপড়া জানে না সবাই সহযোগিতা করছে বন্দনাকে৷‌ ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিস্টেন্সে লেখাপড়া করছে সে৷‌ এখন চলছে পার্ট ওয়ান পরীক্ষা৷‌

সংশোধনাগার সূত্র জানায়, ২০১০ সালে আগরতলার প্রাচ্যভারতী বিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় বন্দনা৷‌ ২০১২ সালে নিয়মিত ছাত্রী হিসেবে পাস করে উচ্চমাধ্যমিক৷‌ এরপর স্নাতক হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে৷‌

বন্দনাদের বাড়ি আমতলির রামকৃষ্ণ মিশন এলাকায়৷‌ ২০০৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর আগুনে পুড়ে মারা যায় বন্দনাদের বড়দাদার স্ত্রী৷‌ মামলা হয় দুই বোনের নামে৷‌ দোষী সাব্যস্ত করে আদালত৷‌ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়৷‌ সেই জেলে বসেই এখন বন্দনা জীবনের নতুন লড়াই শুরু করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৪

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।