কলকাতা: বুধবার ভারতে পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে লোকসভার ভোটগ্রহণ। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের পাঁচকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
জঙ্গলমহলের মানুষ পঞ্চায়েতের পর এবারও উত্সবের মেজাজে ভোট দিতে তৈরি। প্রত্যেকেই চাইছেন সকাল সকাল ভোট দিতে। মেদিনীপুরে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সন্ধ্যা রায়। ঝাড়গ্রামে উমা সোরেন। পুরুলিয়ায় মৃগাঙ্ক মাহাতো, বাঁকুড়ায় আর এক তারকা প্রার্থী মুনমুন সেন। বিষ্ণুপুরে সৌমিত্র খান ও আসানসোলে প্রার্থী দোলা সেন৷
মেদিনীপুরে সিপিআইয়ের প্রবোধ পাণ্ডা। বাঁকুড়ায় সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়া। বিষ্ণুপুরে বামপ্রার্থী সুস্মিতা বাউড়ি। পুরুলিয়ায় কংগ্রেসের প্রার্থী রয়েছেন নেপাল মাহাতো। আসানসোলে বিজেপির তারকা প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। বাবুল প্রার্থী হওয়ায় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে উত্সাহও রয়েছে৷
মাওবাদী অধুষ্যিত জঙ্গলমহলের পাঁচ কেন্দ্র হলো- পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম। প্রতিটিতেই নিরাপত্তার পাঁচটি বলয় ধরা হয়েছে৷ মাওবাদী অধ্যুষিত এই কেন্দ্রগুলিতে বুথের বিন্যাস অন্যরকম৷ পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে৷ অন্য দফায় তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে বুথের চরিত্রকে৷
এবার ‘মাওবাদী প্লাস’, ‘মাওবাদী’, ‘অতি সংবেদনশীল’, ‘সংবেদনশীল’ ও ‘সংবেদনশীল নয়’ এমন বুথে ভাগ করা হয়েছে। তিন জেলা প্রশাসনই পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে বুথ ঠিক করেছিল। নতুন নিয়মে প্রার্থীদেরও বুথের বিন্যাস দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ গত শনি ও রোববার মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ায় গিয়ে বৈঠকের পর পুরনো বুথবিন্যাসে বদল আনেন৷
‘অতিবাম’, ‘উগ্রপন্থী’ ও ‘মাওবাদী প্লাস’-এ দুই সেকশন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। মোট ১৬ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন বুথের দায়িত্বে। এলডব্লিউ অর্থাত্ মাওবাদী প্রভাবযুক্ত বুথে এক সেকশন বা আটজন করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য করে থাকবেন।
‘অতি সংবেদনশীল’ বুথে থাকবেন চারজন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা। ‘সংবেদনশীল’-এ চারজন সশস্ত্র পুলিশ ও ‘সংবেদনশীল নয়’ এমন বুথে থাকবেন দু'জন সশস্ত্র পুলিশ।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৩৯, বাঁকুড়ায় ৭৩, পুরুলিয়ায় ৯১ কোম্পানির কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। তিন জেলার জন্য রাখা হয়েছে একটি হেলিকপ্টার৷
কলাইকুণ্ডা থেকে মঙ্গলবারই আকাশপথে চক্কর দিতে শুরু করে হেলিকপ্টার। পাশাপাশি ওয়েব কাস্টিং ক্যামেরা, ডিজিট্যাল ক্যামেরা রয়েছে। গত পঞ্চায়েতে মাওবাদী উপদ্রুত ভোটে আগের দিন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার ক্লাস্টার তৈরি হচ্ছে আশপাশের এলাকায়।
বুধবার সকাল সাতটার আগেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছে যাবে, যেখানে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। সেখানে তারা পায়ে হেঁটেই পৌঁছে যাবেন।
ঝাড়গ্রাম, বিনপুর, বান্দোয়ান, পুরুলিয়ার বলরামপুর, বাগমুন্ডি, জয়পুরে একসময়ের মাওবাদী ঘাঁটি এলাকায় ভোট সকাল সাতটায় শুরু হয়ে চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। অন্যখানে ভোট চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৪