নয়াদিল্লি থেকে: ১৬তম জাতীয় সংসদ (লোকসভা) নির্বাচনে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের যে পরাজয় ঘটেছে তার দায় স্বীকার করেছেন দলের প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী। একইসঙ্গে নতুন সরকার গঠনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) অভিনন্দন জানিয়েছেন তারা।
৫৪৩টি আসনের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কংগ্রেসের দুই কর্ণধার।
দুপুরেই অপেক্ষমান সাংবাদিকদের মাঝে খবর আসে সোনিয়া গান্ধী কথা বলবেন। সেই থেকে অপেক্ষা শুরু। পরাজিত কংগ্রেস শিবিরে তখনও চলছে বেশ নিস্তব্ধতা। এরপরই বেশ কয়েকজনকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মাঠের পূর্বকোণে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। কাঁচের ওপর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস লেখা এবং দলের প্রতীক পাঞ্জার চিহ্ন দেওয়া দু’টি বড় ফলক দেওয়া হয়। সামনে আসে একটি টেবিল। সেখানে রাখা হয় দু’টি মাইক্রোফোন। কোনো টেলিভিশনের মাইক্রোফোন সেখানে রাখতে দেওয়া হংয়নি। দূরে রাখা সাউন্ডবক্স থেকেই সাউন্ড সংগ্রহ করতে বলা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর পুত্রসহ নিজ বাসা থেকে হেঁটে কার্যালয়ে আসেন সোনিয়া গান্ধী।
হাসিমুখে প্রথমেই বক্তব্য রাখেন রাহুল গান্ধী। বিজেপির নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানান তরুণ এই নেতা।
তিনি বলেন, কংগ্রেস অনেক খারাপ ফল করেছে। দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি এর দায় নিচ্ছি। এ ফলাফল নিয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত।
রাহুলের পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সোনিয়া গান্ধী। কালো পাড়ের সাদাকালোর আভার সুতি শাড়ি পরা সোনিয়ার শুভ্রতাকে উপচে যাচ্ছিল নির্বাচনের হারের বিষণ্নতা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি বিজেপির নেতৃত্বে গঠিত হতে যাওয়া নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এ পরাজয়ের জন্য দলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায় নিচ্ছি।
সোনিয়া বলেন, আমরা যেভাবে প্রত্যাশা করেছিলাম সেভাবে সমর্থন পাইনি। তবে জয়-পরাজয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ারই অংশ। আমরা জনমতকে শ্রদ্ধা জানাই।
এছাড়া, জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে নতুন সরকার কোনো আপোস করবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সোনিয়ার বক্তব্যের সময়ও সাদা পাঞ্জাবি ও জিন্স পরিহিত রাহুলের মুখে হাসি লেগেছিল।
মিনিট পাঁচেকের বক্তব্য রেখে সাংবাদিকেদের কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই চলে যান মা-পুত্র।
নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৩৩৭ আসনে জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। বিপরীতে মাত্র ৬০ আসন পেয়ে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ’র। অবশিষ্ট সব দলের প্রার্থীরা মিলে পেয়েছে ১৪৬টি আসন। বিজেপি একাই জিতেছে ২৮৪ আসনে।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ুর জয়ললিতার দল এডিএমকে। তারা জিতেছে ৩৮টি আসনে। চতুর্থ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা ব্যানার্জির দলটি পেয়েছে ৩৪ আসন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৪
** পরাজয়ের দায় দলের সবার, রাহুলের একার নয়