কলকাতা: আবারও সালিশি সভা করে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠলো বীরভূমের এক আদিবাসী গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও রোববার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ধর্ষিতার পিতা।
ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে এলাকার কয়েকজন তরুণ মিলে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় সালিশি সভা বসে গ্রামের মোড়লের নেতৃত্বে। সেখানে ধর্ষিতার পরিবারকে তিন হাঁড়ি হাঁড়িয়ার(এক ধরনের দেশী মদ) বিনিময়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে বলা হয়।
নির্দেশ অমান্য করে পুলিশের কাছে গেলে ধর্ষিতার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছিলো বলে অভিযোগ।
কিছুদিন আগেই বীরভূমের লাভপুর গ্রামের এক আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণ এবং এ ঘটনায় খাপ পঞ্চায়েতের মোড়লের ভূমিকা নিয়ে গোটা ভারতে তীব্র বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ের জন্য পুলিশকে তিরস্কার করে।
ভারতের আদিবাসী গ্রামগুলিতে খাপ পঞ্চায়েত একটি চালু ব্যবস্থা। আদিবাসী সমাজে এই খাপ পঞ্চায়েত যথেষ্ট প্রভাবশালী। এই পঞ্চায়েত কোন নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত না হলেও আদিবাসী জীবনযাত্রার কথা মাথায় রেখে প্রশাসন এই খাপ পঞ্চায়েতগুলিকে কিছুটা গুরুত্ব দেয়।
গ্রামের কিছু ব্যক্তি এবং একজন মোড়ল নিয়ে এই পঞ্চায়েত গঠিত হয়। আদিবাসীদের মধ্যে ছোট ছোট বিবাদ,সমস্যা মেটাতে এই পঞ্চায়েতগুলো সাহায্য করে। কিন্তু আইনের চোখে এগুলোর কোন অস্তিত্ব নেই। রাজ্য সরকার এই ধরনের সালিশি সভাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও সালিশি সভা বন্ধ হয়নি।
ভারতের এই বিতর্ক যথেষ্ট প্রবল যে খাপ পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আদৌ বজায় রাখা উচিৎ কিনা?
গ্রামের মোড়লল তিন হাঁড়ি হাড়িয়া দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে বললেও গ্রামেরই এক শিক্ষকের পরামর্শে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন ধর্ষিতার বাবা।
রোববার অভিযোগ পাবার পর বিরাট পুলিশ বাহিনী গ্রামে যায়। তবে কোন গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই তিনজনের বয়স ১৮ বছরের কম। ভারতীয় আইনে এরা নাবালক। সরকারের তরফ থেকে গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জুন ০২ , ২০১৪