ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মাকরানার হোয়াইট মার্বেলেই অনিন্দ্য তাজমহল

মান্নান মারুফ ও ইশতিয়াক হুসাইন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৪
মাকরানার হোয়াইট মার্বেলেই অনিন্দ্য তাজমহল

রাজস্থান, ভারত থেকে: পৃথিবীখ্যাত প্রেমের নির্দশন তাজমহলের সৌন্দর্য নিয়ে কতই না আলোচনা! শুধু প্রেম নয়, সৌন্দর্যের নিদর্শন হিসেবেও এর খ্যাতি বিশ্বজোড়া।

বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্য ও ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃত তাজমহল।

তাই তো তাজমহলকে ভারত সরকার ট্যুরিজম আইকন হিসেবে ব্যবহার করে বিশ্বের কাছে নিজের দেশকে তুলে ধরছে।    

আর তাজমহলের এই সৌন্দর্যের প্রধান উপকরণ হোয়াইট মার্বেল। শত শত বছর ধরে এই পাথর অবিকৃত ও অক্ষয় নির্দশন হিসেবে শোভা পাচ্ছে। ১৬৩২ সালে এই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে প্রায় ২২ বছর ধরে চলে তা।

কিন্তু যে হোয়াইট মার্বেলের কারণে এর খ্যাতি বিশ্ব জুড়ে, সে সম্পর্কে অনেকেই হয়ত অবগত নন। ভারতের রাজস্থান প্রদেশের ছোট্ট শহর মাকরানার সাদা পাথরেই তাজমহলের সৌন্দর্য বিশ্বের খ্যাতি পেয়েছে। পরিচিত পেয়েছে অনিন্দ্য নির্দশন হিসেবে। এই পাথর বিশ্বের সেরা হোয়াইট মার্বেল হিসেবে স্বীকৃত।  

মোঘল সম্রাট শাহজাহান মাকরানা থেকে এসব সাদা পাথর আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইরানিয়ান সুলতানাতের নামকরণে মাকরানা শহরের খ্যাতিও সাদা পাথরের জন্য। এলাকার অধিবাসীদের অধিকাংশই পাথরের খনিতে কাজ করেন।

তাজমহল ছাড়াও বিশ্বের নামকরা বহু ভবন, মসজিদ ও মন্দির এই পাথরেই তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখ্য পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভবন, কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সৈয়দ জায়েদ মসজিদ, জয়পুরের বিড়লা মন্দির, মহীশূরের জৈন মন্দির।

হোয়াইট মার্বেল দিয়ে তাজমহল তৈরি করতে ইরান ও পাকিস্তান থেকে ১৮০০ জন পাথুরে কারিগর ভারতের মাকরানায় এসেছিলেন। পরবর্তীতে তারা এখানে স্থায়ী হন। মাকরানার জনসংখ্যার ৫৮ শতাংশই মুসলিম। হিন্দু ৩৭ শতাংশ, জৈন ৪.৭ শতাংশ এবং বাকি ০.৩ শতাংশ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী।

এই শহরের সঙ্গে রাজস্থানের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে রেল ও সড়ক যোগাযোগ রয়েছে।   এখানে ৫৬০ মিলিয়ন টন পাথর মজুদ রয়েছে। ৯০০ পাথর খনিতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ কাজ করেন। মাকরানায় শিক্ষিতের হার ৬৯.৩ শতাংশ হলেও সব মিলিয়ে বিভিন্ন পাথরের খনিতে কাজ করেন প্রায় এক লাখ মানুষ।

পাথর কাটা এবং তা প্রক্রিয়াজাত করতে মাকরানায় ৮০০ কারখানা রয়েছে। মাকরানার পাথর রূপকশোভিত।
 
এখানকার হোয়াইট মার্বেল সবচেয়ে পুরনো এবং বিশ্বের সেরা সাদা পাথর। ভারত সরকার বর্তমানে প্রতি বছর ১৯.২০ মিলিয়ন পাথর উত্তোলন করে থাকে মাকরানার বিভিন্ন খনি থেকে; যার মূল্য ১০ হাজার ৩৬ কোটি ভারতীয় রুপি।

সাদা পাথরের উল্লেখযোগ্য খনির মধ্যে রয়েছে ডংরি, দেবী, উলোদী, সাবওয়ালি, গুলাবি, কুমারি, চাক ডঙ্গরি, চোসিরা ও পাহার কুয়া। তাজমহল তৈরি করা হয়েছে পাহার কুয়ার পাথর থেকে।

এই পাথর যেমন সেরা হোয়াইট মার্বেল, তেমনি এর দামও অনেক বেশি। বর্তমান বাজার মূল্যে এক স্কয়ার মিটার হোয়াইট মার্বেলের দাম ১২ থেকে ৫০ মার্কিন ডলার, ভবন তৈরির এক স্কয়ার মিটার পাথরের মূল্য ৫০ থেকে ১৩৫ মার্কিন ডলার, ওয়াল ডেকোরেশন পাথরের দাম ৩০ থেকে ৫০ ডলার, বাথরুম ফিটিংসের পাথরের দাম ১৫ থেকে ৫০ মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৪

** আহমেদাবাদের কাপড় জগতে নয়া মনীষা রাণী!
** মোদীর গুজরাট উন্নয়নের আইকন ‘গিফটসিটি’
** চকচকে পরিপাটি ‘গান্ধীনগর’
** আহমেদাবাদ থেকে বাংলাদেশ যাচ্ছে ব্লাড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
** ঘুরে আসি আজমীর
** দিল্লি প্রেসক্লাবে সাবসিডি নেই!
** দিল্লির রাতে সস্তা দোকানিরা...

** দিল্লির আশীর্বাদ দিল্লি মেট্রো,ঢাকা মেট্রো কবে

** অ্যারাভেলি পর্বতে ঘেরা ভ্রাতৃত্ব

** ৩৬ ঘণ্টার বিচিত্র রূপ!

** ইন্টারনেটে বাংলাদেশ এগিয়ে

** সেই তো আমরাই!
** লাইফলাইন অব ইন্ডিয়া
** দিল্লি কত দূর?
** ভারতীয় ইমিগ্রেশনে বাংলাদেশের মর্যাদা
** গ্রীনলাইনে ভুগতে ভুগতে কলকাতা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।