ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পূজার ভিড় সামলাতে অসহায় কলকাতার পুলিশ

রক্তিম দাশ. সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১১

কলকাতা: মহানগরীর পূজার ভিড় সামলাতে পুলিশী ব্যবস্থার কোন কমতি ছিল না। তবুও ষষ্ঠীর সকাল থেকে সপ্তমীর রাত পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার জনস্রোত সামলাতে গিয়ে অসহায় হয়ে পড়ল কলকাতা পুলিশ।



এদিন রাতে পুলিশের অসহায়তা আরও প্রকট হয়ে পরে। রাতে একটা সময় এই ব্যাপক জনজোয়ারের কাছে কার্যত পুলিশ প্রায় হাল ছেড়ে দিয়ে ভগবানের ওপর ভরসা করে থাকল বললে বোধহয় বাড়িয়ে বলা হবে না।

এমনিতেই বেহালা থেকে শুরু করে হরিদেবপুর ছাড়িয়ে আরও দক্ষিণে যতদূর যাওয়া যায়, ততই এদিন মানুষের ভিড়ে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। ফুটপাথ ছেড়ে এই জনস্রোত মূল রাস্তায় নেমে পড়ে।

তার ওপর গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্য পুলিশের আওতা থেকে দক্ষিণের ১৭টি থানা এলাকা কলকাতা পুলিশের অধীনে এসেছে। কলকাতা পৌরসভার অর্ন্তগত এই ৪১টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের আশা ছিল, পূজার সময় যানজট নিয়ন্ত্রণে সফল হবে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু বাস্তবে হল ঠিক উল্টো।

ষষ্ঠীর সকাল থেকেই দক্ষিণের বেহলা, কসবা, হরিদেবপুর, টালিগঞ্জ, রাসবিহারী, যাদবপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলিতে ব্যাপক যানজট নাকল হল সাধারণ মানুষ।

এদিন দিনের প্রথম ধাক্কাটা অবশ্য এল পুলিশের কাছ থেকে! সকালে পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না। বেলা যত বাড়ল, মানুষের স্রোত বনাম পুলিশের অসম যুদ্ধ দেখল গড়িয়া থেকে সিঁথি, তিলজলা থেকে ঠাকুরপুকুর। ২৭ হাজার পুলিশকর্মী পেরে উঠতে পারছিল না তাদের থেকে সংখ্যায় অন্তত ১০ গুণ বেশি জনস্রোতের সঙ্গে।

এক ট্রাফিক পুলিশকর্তার আক্ষেপ, ‘মানুষের স্রোত আসছে-যাচ্ছে। আমরা শুধু এক জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে। ’

অভিজ্ঞ পুলিশকর্মীরা এতে অভ্যস্ত। কিন্তু নতুনদের অনেকের প্রশিক্ষণ প্রায় হয়নি। যে দু’হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে তাদেরও এক দিনের প্রশিক্ষণের পরই নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফল যা হওয়ার, সেটাই হয়েছে। দিনভর যানজটে আটকে ছিল শহর।

শুধু বিকেলের পর থেকে কয়েক ঘণ্টা মনে হচ্ছিল, আর হয়তো ভোগাবে না যানজট। রাত ন’টাতেও তারাতলা থেকে নিউ আলিপুর যেতে সময় লাগছিল ২০ থেকে ২৫ মিনিট। তবে কসবা কানেক্টর, বেহালার জেমস লং সরণি, হরিদেবপুরের মহাত্মা গাঁধী রোড কিংবা উত্তরের অরবিন্দ সরণি-আমহার্স্ট স্ট্রিটে গাড়ির গতি ছিল কম। তুলনায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, কলেজ স্ট্রিট অথবা রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে যানবাহনের গতি ছিল অনেক মসৃণ।

কিন্তু রাত বাড়তেই মূলত দক্ষিণ কলকাতা আবার যানজটে হাসফাস। সন্ধ্যা সাতটায় গড়িয়াহাট থেকে যাদবপুর যেতে যেখানে মিনিট কুড়ি লাগছিল, রাত ১১টায় সেই দূরত্বটাই পেরোতে লেগেছে দ্বিগুণেরও বেশি সময়। পুলিশকে আরও সমস্যায় ফেলে দিয়েছে অটোরিকশা।

শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বিকেল তিনটের পর থেকে অটো বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। সেই নির্দেশকে ঘিরে শুরু হয় প্রতিবাদ। দক্ষিণ কলকাতা ও সংযোজিত এলাকায় কয়েকটি স্থানে অবরোধও করেন অটোচালকরা।

পুলিশ কিন্তু সিদ্ধান্তে অটল। গত কয়েক বছরের মতো এবারেও সসম্মানে উত্তীর্ণ হতে চায় তারা। সংযোজিত এলাকার চ্যালেঞ্জ নিয়েই।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।