ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে এবার ২৪ঘণ্টায় ১৬শিশুর মৃত্যু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১১

কলকাতা: বি সি রায় হাসপাতালের শিশু মৃত্যুর ঘটনাই শেষ নয়, এবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও গত ২৪ঘণ্টায় ১২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সাথে আবারও শুক্রবার সকালে ৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে কলকাতার বি সি রায় হাসপাতালে।

এনিয়ে এই কদিনে পশ্চিমবঙ্গে মোট ৩৩ টি শিশুর মৃত্যু ঘটলো।

যদিও বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. তাপস ঘোষের দাবি, এখনও পর্যন্ত শিশু মৃত্যুর হার স্বাভাবিক। তিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এস এন এম ওয়ার্ডের শিশু মৃত্যুর হিসাব জানালেও নার্সারি বিভাগের শিশু মৃত্যুর খবর নাকি তার জানা নেই। সেই হিসাব তিনি দিতে রাজিও নন।

হাসপাতাল চত্বর ঘুরলেই বোঝা যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে কোন ভাবে শিশু মৃত্যুর খবর  চেপে রাখতে চাইছে। একইভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকের কাছে শিশু বিভাগে ডাক্তারের উপস্থিতি সংখ্যাও গোপন করতে চেয়েছে। হাসপাতালের এস এন এম ওয়ার্ড ও নার্সারি ওয়ার্ডে শিশু মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছে। একেকজন একেক রকম সংখ্যাও বলছেন।

ডেপুটি সুপার বলেছেন, এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে যে তথ্য তাদের কাছে আছে তা নাকি স্বাভাবিক। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে এস এন এম ওয়ার্ডেই ৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এটা কি স্বাভাবিক? যদিও এই হিসাবের সাথে নার্সারি বিভাগের শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ধরা নেই।

হাসপাতালের কর্মীরাই জানাচ্ছেন, নার্সারি ওয়ার্ডে মৃত্যু হয়েছে আরও ৬টি শিশুর। ফলে যা দাঁড়াচ্ছে তাহলো ২৪ঘণ্টায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১২।

শিশুর মায়েরা এদিন অভিযোগ করেছেন, দীপাবলীর আগের দিন থেকেই একাধিক চিকিৎসক অনুপস্থিত। কার্যত হাউস স্টাফরা রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। যদিও এই মায়েরা আতঙ্কে তাঁদের পরিচয় জানাতে চাননি।

কয়েকদিন আগেই রাজ্যের দুই মন্ত্রী বর্ধমান হাসপাতাল পরিদর্শন করে রোগীদের আশ্বাস দেন উন্নত চিকিৎসা, নিরাপত্তা দেবে সরকার। মন্ত্রীরা যাওয়ার পর হাসপাতালের পরিষেবার উন্নতি তো হয়নি, বরঞ্চ রোগীর বাড়ির লোকজন বলেছেন, অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে।

এরপরেই হাসপাতালের নিউ বিল্ডিংয়ের অপারেশন থিয়েটারের সমস্ত যন্ত্রপাতি চুরি হয়। তা ৫দিন পরও উদ্ধার হয়নি। খোদ মন্ত্রীকে রোগীর স্বজনেরা ঘিরে ধরে অভিযোগ করেন, ‘এই পরিবর্তন আমরা চেয়েছিলাম? এখন স্যালাইন পর্যন্ত কিনে দিতে হচ্ছে আমাদের। হাসপাতালে শুধু নেই আর নেই। ’

এদিকে,ফের শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটল বি সি রায় হাসপাতালে। গত দু’দিনে ১৩টি শিশুর মৃত্যুর পর এদিন ৪টি শিশুর মত্যু হয়। এই নিয়ে গত তিন দিনে বি সি রায় হাসপাতালে ১৭টি শিশুর মৃত্যু হল।

এদিকে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটি শুক্রবার রিপোর্ট দিয়েছে। রিপোর্টে হাসপাতাল কর্তৃক্ষের কোন গাফিলতি নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দুই চিকিৎসক ও একজন নার্স নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রয়েছে।

ভারতীয় সময়:১৭৪৫ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।