ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

আগরতলা ফল গবেষণা কেন্দ্রে চাষ হচ্ছে কাজুবাদাম

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২০ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২১
আগরতলা ফল গবেষণা কেন্দ্রে চাষ হচ্ছে কাজুবাদাম

আগরতলা (ত্রিপুরা): কাজুবাদামের আদি ভূমি ব্রাজিলসহ মধ্য আমেরিকা এবং উত্তর দক্ষিণ আমেরিকার, উত্তর পূর্ব ব্রাজিল। অনেকের মতে ভাস্কদাগামার হাত ধরে প্রথম ভারতীয় উপমহাদেশে কাজুবাদামের প্রবেশ ঘটে।

তারপর ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের এলাকাগুলিতে।

বর্তমানে ভারতের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কেনিয়া, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, মাদাগাস্কার প্রভৃতি দেশেও কাজুবাদাম উৎপাদিত হয়ে থাকে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাজুবাদাম চাষ হয়ে থাকে। অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি ত্রিপুরা রাজ্যে এর চাষ হচ্ছে। ত্রিপুরা সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং ভূমি সংরক্ষণ ডিরেক্টরের আগরতলার পার্শ্ববর্তী নাগিছড়া এলাকায় যে উদ্যান ও ফল গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে তাতে অন্যান্য ফলের পাশাপাশি কাজুবাদামের বাগান রয়েছে। মূলত এই গবেষণা কেন্দ্রে ১৯৮৪ সালে প্রথম কাজুবাদামের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন প্রজাতির কাজুবাদাম রয়েছে সেগুলি এখানে এনে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়।

মূলত ত্রিপুরা রাজ্যের মাটি এবং জলবায়ুতে কোন প্রজাতির কাজুবাদাম ভালোভাবে বেঁচে থাকতে এবং প্রচুর পরিমাণে ফল দিতে সক্ষম তা দেখা হয়। বর্তমানে এই বাগানে ৬ প্রজাতির পেশী কাজুবাদাম গাছ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হল প্রিয়াঙ্কা, টেঙ্গুরলা, চার ইত্যাদি।

ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর কেশোনাটের উদ্ভাবিত প্রজাতি পশ্চিমবঙ্গের ঝারগ্রামের কাজুবাদামসহ আরো অন্যান্য জায়গা থেকে গাছ এনে এখানে লাগানো হয়েছে বলে জানান ফল এবং উদ্যান গবেষণা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ। এক একটি গাছ থেকে বছরে সর্বোচ্চ ৮ কেজি পর্যন্ত কাজু উৎপাদন হয়। তবে গবেষণা কেন্দ্রের মূল লক্ষ্য হচ্ছে চারা তৈরি করে রাজ্যের কৃষকদের মধ্যে এই চারা বিতরণ।

তাই উৎপাদিত কাঁচা কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত না করে এগুলি দিয়ে চারা তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির কাজুবাদাম গাছে কলম করে সংকর প্রজাতির গাছ সৃষ্টি করা হচ্ছে যেগুলি থেকে অধিক পরিমাণ কাজু উৎপাদিত হবে। এই গবেষণা কেন্দ্রে উদ্ভাবিত নতুন প্রজাতির কাজুবাদাম গাছ বছরে ১২ থেকে ১৫ কেজি ফলন হবে বলেও জানান তিনি।

এর ফলে ত্রিপুরা রাজ্যের চাষিরা কাজু চাষের প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হবেন এবং আরো বেশি পরিমাণ জমিতে কাজু বাদাম চাষ হবে যা রাজ্যের আর্থিক বিকাশে বড় ভূমিকা নেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। উদ্যান ও ফল গবেষণা কেন্দ্রের কাজু বাদামের প্লটটি দেড় হেক্টর জায়গা জুঁড়ে রয়েছে। এর মধ্যে সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০টি গাছ রয়েছে।

তিনি আরো জানান, এবছর এই বাগানে কাজুবাদামের ভালো ফলন হয়েছে তাই চারা উৎপাদনের জন্য যে পরিমাণ বীজের প্রয়োজন হবে এগুলোকে রেখে বাকিগুলি বিক্রি করে দেওয়া হবে।

এখন কাজুবাদামের মৌসুম তাই প্রতিদিন বাগানে কর্মরত শ্রমিকরা গাছের তলা থেকে কাজুবাদাম কুড়িয়ে তা বাগানের পাশে একটি ঘরের মধ্যে সংগ্রহ করে রাখছেন। পাশাপাশি গাছগুলিতে ঝুলে আছে কাঁচাপাকা সবুজ হলুদ লাল রঙের কাজুবাদাম।

বর্তমানে দক্ষিণ জেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা কাজুবাদাম বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করছেন। রাজ্যে কাজুবাদাম চাষের কথা বললে দক্ষিণ জেলার নাম সবার আগে উঠে আসে। তবে উদ্যান ও ফল গবেষণা কেন্দ্র যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ফলে সমগ্র রাজ্যে কাজু চাষ আরো ব্যাপারে হবে বলে আশা করা যায়।

বাংলা‌দেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২১
এসসিএন/কেএআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।