ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘আগুন কি দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকে?’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩
‘আগুন কি দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকে?’

ঢাকা: এক দিনের ব্যবধানে বদলে গেল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট এলাকার চিত্র। নেই আগের মতো কোলাহল।

যেখানে প্রতিদিন ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোলাহলে মুখরিত থাকতো। সেই মার্কেট এখন ধ্বংসস্তূপ। বৃহস্পতিবারের অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে শত শত দোকান। নিঃস্ব হয়ে গেছে বহু ব্যবসায়ী। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটের পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর সামনে বিমর্ষ মুখে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা।  

অগ্নিকাণ্ড স্থলসংলগ্ন পাশের রাস্তায় ভ্যানগাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম মানিক। কৃষি মার্কেটে হাওলাদার ফ্যাশন নামে ছিল তার ৫টি কাপড়ের দোকান। পুড়ে গেছে সবকটি। ক্ষতি হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।  

শহিদুল ইসলাম মানিক বাংলানিউজকে বলেন, আগুন যখন লাগে তখন আমি বনশ্রীতে ছিলাম। কৃষি মার্কেটের পাশে আমার এক বন্ধু থাকে। সে আমাকে ফোন করে জানায়, মার্কেটে আগুন লেগেছে। এক ঘণ্টার মধ্যে আমার পাঁচটি দোকান পুড়ে যায়। খেয়াল করে দেখেন, প্রতিটি মার্কেটে আগুন লাগছে রাতে বা ভোর রাতে। দিনের বেলায় কি আগুন ঘুমিয়ে থাকে, আর রাত হলেই আগুন কি জেগে ওঠে? বঙ্গবাজার ও নিউমার্কেটে কখন আগুন লেগেছিল? ভোরবেলা কিভাবে আগুন লাগে? মার্কেট যখন বন্ধ থাকে তখন আগুন লাগে অথচ আগুন লাগার কথা মার্কেট চলা অবস্থায়। সে সময় মার্কেটের অনেক ইলেকট্রিক লাইন চালু থাকে, ক্রেতা বিক্রেতাদের আসা যাওয়া থাকে। এই সময়টাই দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বেশি থাকে।  

অভিযোগ করে কাপড় ব্যবসায়ী মানিক বলেন, সামান্য শর্ট সার্কিট থেকে এত বড় আগুন লাগার কথা না। এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কথা না। ঢাকায় এখন পর্যন্ত যতগুলো মার্কেটে আগুন লেগেছে, ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। আগুন জ্বলা শেষে নিজে নিজে এমনিতেই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসকে আরও শক্তিশালী ও একটিভ হতে হবে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে পানির সংকট ছিল। প্রতিটি মার্কেটেই হাইড্রোলিক পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। এই ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়। হাইড্রোলিক পানির ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকেই করতে হবে।

এদিকে, শুক্রবার কৃষি মার্কেটের সামনে জেলা প্রশাসনের পক্ষে একটি বুথ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরাও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্তি করছেন।

ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা করবো। তারপর আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মানবিক সহায়তা করার চেষ্টা করবো।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোর ৩টা ৪৩ মিনিটে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে প্রথমে সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের আরও ১০টি ইউনিট। প্রায় ৬ ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৩৭ জন কর্মী। তবে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩
এমএমআই/নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।