ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশকে নয়, ওয়ালমার্টকেই পোশাক ফেরত নিতে বলেছে কানাডা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২৩
বাংলাদেশকে নয়, ওয়ালমার্টকেই পোশাক ফেরত নিতে বলেছে কানাডা

ঢাকা: বৈশ্বিক চেইনশপ ওয়ালমার্টকে বাংলাদেশে তৈরি জর্জ ব্র্যান্ডের ২ লাখ ১৬ হাজারের বেশি পোশাক ক্রেতাদের কাছ থেকে ফেরত নিতে বলেছে কানাডা সরকার। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই পোশাক পরলে দম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

 

জানা গেছে, পোশাকগুলো বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হলেও পরিপূর্ণ পরীক্ষা নীরিক্ষা করেই কিনেছে ওয়ালমার্ট। প্রস্তুতকারকদের কোনো ভুল নেই। সুতরাং বাংলাদেশের পোশাক নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বা ফেরত দেওয়া হচ্ছে, এমন ধারণা একেবারেই অমূলক। যে কোনো বৈধ কারণে পণ্য প্রত্যাহার করা একটি প্রচলিত চর্চা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন শত শত প্রত্যাহারের ঘটনা আছে।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, বাংলাদেশের পোশাক ফেরত দিচ্ছে ১২ দেশ। পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেছে, প্রায় ১২টি দেশ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রত্যাহার করছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণও তারা খুঁজে পায়নি। তবে কানাডার বিষয়ে তারা বলছে, কানাডা সরকার ওইসব পোশাক ওয়ালমার্টকে ফেরত নিতে বলেছে, বাংলাদেশকে নয়।

কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গাজীপুরের ইউনিক ডিজাইনার্সের কারখানায় তৈরি জর্জ ব্র্যান্ডের স্লিপার বাজার থেকে তুলে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বারবার ধোয়ার কারণে পোশাকের জিপারের বর্ধিতাংশ ভেঙে যেতে পারে এবং পায়ের ও গলার গ্রিপ চেপে যেতে পারে। ফলে সেই পোশাক পরা ব্যক্তির দম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

এ ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সমিতি বলেছে, স্বাস্থ্যগত কিছু ঝুঁকির কারণে পণ্যগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি প্রস্তুতকারকদের ভুল নয়।  

বিজিএমইএর বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে তৈরি প্রতিটি পণ্য অবশ্যই একটি কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং ভোক্তাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ল্যাব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়। সমস্ত রপ্তানিযোগ্য পণ্যকে অবশ্যই ক্রেতাদের মান ও রপ্তানি বাজারের জন্য প্রাসঙ্গিক আইনের শর্ত পূরণ করতে হয়। ভোক্তাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার শর্ত পূরণে ব্যর্থ যে কোনো পণ্য সাধারণত ক্রেতাদের দ্বারা প্রত্যাখান করা হয়। তাই ‘বাংলাদেশে তৈরি পোশাক উল্লেখিত দেশগুলোতে নিষিদ্ধ’ এর মতো যে কোনো অপব্যাখ্যা সত্যের অপলাপ মাত্র।  

গত ৪ অক্টোবর কানাডা সরকার সে দেশের সরকারি ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে যাওয়া জর্জ ব্র্যান্ডের এসব পোশাক ওয়ালমার্টে ফেরত দেওয়ার জন্য গ্রাহকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।  

বিজিএমইএ আরও বলছে, উল্লেখিত পণ্যগুলো ২০২২ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো হয়েছিলো এবং ২০২২ এর নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত কানাডায় খুচরা বাজরে বিক্রি করা হয়েছিলো। হেলথ কানাডার পণ্য প্রত্যাহার বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে “২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত সংস্থাটি কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, এ মর্মে কোনো রিপোর্ট পায়নি।

আরও বলা হয়, যে কোনো বৈধ কারণে পণ্য প্রত্যাহার করা একটি প্রচলিত চর্চা এবং আজ পর্যন্ত এই ধরনের শত-শত প্রত্যাহার ওইসিডি ওয়েবসাইটে তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। ওইসিডি ‘পণ্য ফেরৎ নেওয়ার গ্লোবাল পোর্টাল’ হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং ওইসিডি সদস্যদের পণ্য প্রত্যাহার করার বিজ্ঞপ্তিগুলো এই পোর্টালে তালিকাভূক্ত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।