ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দামের কারণে কমেছে ফল বিক্রি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
দামের কারণে কমেছে ফল বিক্রি

ঢাকা: বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের ফল। কিছু দেশি ফলের দাম এখনও ক্রেতার নাগালের মধ্যে থাকলেও আকাশ ছুঁয়েছে বিদেশি ফলের দাম।

ফলে গত কয়েক মাসে বেচা-বিক্রি কমেছে ফল দোকানগুলোতে।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজার এলাকার ফলের দোকান ঘুরে এমন তথ্য জানা যায়। এ বাজারে বর্তমানে বিদেশি ফলের মধ্যে প্রতিকেজি ড্রাগন ফল ২৫০-২৮০ টাকা, কমলা ২২০ টাকা, মাল্টা ৩০০ টাকা, লাল আঙুর ৩৫০-৪০০ টাকা, সবুজ আঙুর ৪৫০ টাকা, অস্ট্রেলিয়ান আপেল ২৫০-২৭০ টাকা, গালা আপেল ২৮০ টাকা, ফুজি আপেল ২৫০-৩০০ টাকা, সবুজ আপেল ৩০০-৩২০ টাকা, নাশপাতি ২৬০ টাকা, কাটিমন আম ৩৫০ টাকা, সাম্বাম ১৬০ টাকা ও পার্সিমন ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া দেশি ফলের মধ্যে প্রতিকেজি পেয়ারা ৭০-৯০ টাকা, পেঁপে ৯০-৯০ টাকা, আতা ৫০০-৫৫০ টাকা, সফেদা ১০০ টাকা, আমড়া ১৫০ টাকা, কালো তরমুজ ৮০-১০০ টাকা, সবুজ তরমুজ ৮০ টাকা, আমলকী ২৫০ টাকা, জলপাই ১০০ টাকা, দেশি মাল্টা ১৬০ টাকা, আনার ৪৮০ টাকা, জাম্বুরা (প্রতিপিস) ১৫০ টাকা, কদবেল (প্রতিপিস) ৫০ টাকা, আনারস (প্রতিপিস) ৫০ টাকা, সাগর কলা (প্রতিডজন) ১৩০ টাকা, সবরি কলা (প্রতিডজন) ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি খরচ বাড়ায় গত বেশ কয়েক মাস ধরে বিদেশি ফলের দাম বেশি। দেশি ফলের দাম মৌসুমে কিছুটা কম থাকলেও অন্যান্য সময় নাগালের বাইরে থাকে। তার ওপর মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। দ্রব্যমূল্যও বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে গত কয়েক মাস ধরে তাদের ব্যবসায় মন্দা চলছে। বেচা-বিক্রি নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে।

রামপুরা কাঁচাবাজারের দেশি-বিদেশি ফল বিতানের মালিক মো. রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, গত ছয় মাসে দুই তৃতীয়াংশ বিক্রি কমেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৩০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতাম, সেখানে এখন ১০-১২ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতেই কষ্ট হয়ে যায়। সামনে নির্বাচন, হরতাল-অবরোধ চলছে। মানুষ ঘর থেকে ঠিকমতো বের হচ্ছে না। তার ওপর মানুষের পকেটে টাকা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলের মতো বিলাসী পণ্য খাবে কী করে?

ফলের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমদানি খরচ বাড়ানোয় বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। বেচা-বিক্রি ভালো না হওয়ায় প্রতিমাসে দোকান ভাড়া, কর্মচারী খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আগে আয়-ব্যয় মোটামুটি সমান সমান থাকলেও গত দুই মাসে অবস্থা খুবই খারাপ। দোকান খরচই উঠছে না।

মা ফল দোকানের বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, আগে দৈনিক ৫০-৬০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতাম। এখন কোনো কোনোদিন ১০ হাজার টাকার ফলও বিক্রি হয় না। গত ৫-৬ মাস ধরে এ অবস্থা চলছে। প্রতিমাসেই লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলের দাম বেশি হওয়ায় মানুষ কিনতে আসছে না। অথচ প্রতিমাসে দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল দিয়ে ৩৫ হাজার টাকার মতো ঠিকই খরচ হচ্ছে। কিন্তু সেই খরচ উঠছে না।

রাব্বি নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, বেচা-বিক্রির কথা বইলেন না। ব্যবসার অবস্থা অনেক খারাপ। মানুষ ফল কিনতে আসে না। আসবে কেমনে? চাল, ডাল, তেল, সবজি কিনতেই তো মানুষের পকেটে টান লেগে যায়। এক হাজার টাকা নিয়ে বাজারে গেলে টাকা তো ফিরেই না, উল্টো টাকার অভাবে অনেক কিছু না কিনেই ফিরতে হয়। তার ওপর ফলের দাম এখন অনেক। মানুষ ফল কিনবে কী করে? তাই আমাদের ব্যবসার অবস্থা খারাপ। বেচা-বিক্রি অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।