ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক রাজস্ব নীতিমালার বিকল্প নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪
এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক রাজস্ব নীতিমালার বিকল্প নেই

ঢাকা: দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ যত সহায়ক হবে রপ্তানি খাতে তত বেশি সাফল্য আসবে, সেই সাথে শুল্ক হার বেশি থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ব্যাহত হয়, তাই সহায়ক রাজস্ব নীতিমালার কোনো বিকল্প নেই বলে মত প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘এলডিসি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের প্রস্তুতি’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।

ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদের সঞ্চালনায় সেমিনারে নির্ধারিত আলোচনায় বিজিএমইএ পরিচালক ও ঊর্মি গার্মেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ এবং সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারি অংশগ্রহণ করেন।

স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।

বক্তারা বলেন, জ্বালানিসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন। সেই সাথে বহুজাতিক শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘হাই এন্ডেড’ খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং পণ্য প্রসারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পণ্য মেলার আয়োজনের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও আমাদের কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজতকরণ শিল্পটিকে যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলার শিল্পে রূপান্তরিত করা সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।  

ডিসিসিআই সভাপতি রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য স্বল্প সুদে অর্থয়ান এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে একটি সহায়ক বিনিময় হার নির্ধারণ করার ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ের প্রস্তুতির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সময়ে নেই, সরকার নীতি সহায়তা দিচ্ছে, তবে বেসরকারিখাত সামনের দিনগুলেতে একটি টেকসই দীর্ঘমেয়াদী নীতি সহায়তা প্রাপ্তির প্রত্যাশা করে।

বিজিএমইএ পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই পোশাক খাতের প্রণোদনা প্রত্যাহার করা হলো। এ খাতের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়, এমতাবস্থায় তিনি এখাতের প্রণোদনা সুবিধা ২০২৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আহবান জানান। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য দেশে বৈদেশিক মুদ্রার একটি সহায়ক এক্সচেঞ্জ রেট থাকা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারি বলেন, তৈরি পোশাক ছাড়া পাট, চামড়া ও চা প্রভৃতি পণ্যে রপ্তানি তেমন উল্লেখজনক নয়। কারণ হলো নীতি সহায়তা ও সক্ষমতার অপ্রতুলতা। বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো কিভাবে তাদের রপ্তানিকারকদের সহায়তা দিচ্ছে তা অনুসরণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

মূল প্রবন্ধে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সুযোগও তৈরি হবে। তবে সেগুলো মোকাবিলার জন্য আমাদের যথাযথ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন একান্ত অপরিহার্য। নীতি সহায়তা ও সংষ্কার, অর্থায়ন, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি এবং আর্থিক খাত চ্যালেঞ্জসমূহ এর মধ্যে অন্যতম।

সেলিম রায়হান বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের মুদ্রানীতির কার্যকারিতা তেমন পরিলক্ষিত হয়নি, এমতাবস্থায় পরিস্থিতি বিবেচনায় আরো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। একই সাথে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে নির্ধারনের আরো সচেতন হওয়ার জন্য তিনি পরামর্শ প্রদান করেন। সর্বোপরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে এসইজেডসমূহে সকল ধরনের সেবা প্রাপ্তি এবং ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাসের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী বলেন, তৈরি পোশাক, ঔষধ, চামড়া ও পাদুকা, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাট ও পাটপণ্যের মত শিল্পগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশকে এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এফএমসিজি, প্লাস্টিক পণ্য, হালকা-প্রকৌশল, হালাল পণ্য ও তথ্য-প্রযুক্তি খাতে রপ্তানি বৃদ্ধিতে মনোযোগী হতে হবে। সম্ভাবনাময় খাত সমূহের বিকাশে ক্রেডিট ইন্স্যুরেন্স, এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট ফান্ড এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল লোন প্রভৃতি হতে ঋণ প্রাপ্তির বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে আরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।