ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘দেশের উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শেখার আছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪
‘দেশের উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শেখার আছে’ কোরিয়ার উন্নয়ন অভিজ্ঞতা: বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা’ শীর্ষক সংলাপে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ অতিথিরা/ ছবি : জাহিদ /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। কারণ দুটি দেশই যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থায় যাত্রা শুরু করে।

সেই পরিস্থিতি থেকে দক্ষিণ কোরিয়া বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশটির কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় শেখার আছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এক সংলাপে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন।  

ঢাকাস্থ দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাস এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে ‘কোরিয়ার উন্নয়ন অভিজ্ঞতা: বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ১৯৭৩ সালে আমাদের জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ৭৮ শতাংশ। কৃষি নির্ভর অর্থনীতি হওয়ায় আমাদের জমির উপর নজর দিতে হয়েছিল। তাই সে সময় শিল্পায়ন সম্ভব হয়নি। কিন্তু বর্তমানে কৃষির অবদান অনেক কমেছে। এখন জিডিপিতে কৃষির অবদান মাত্র ১৭ শতাংশ।
তিনি বলেন, দেশে এখন জনসংখ্যা বাড়ছে। বসবাসের জন্য জমি কমছে। তাই আমাদের কারখানার ওপর নজর দিতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহারণ তুলে ধরে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তৎকালীন ব্রিটিশ জেনারেল ম্যাক আর্থার ভবিষ্যতবাণী করে বলেছিলেন যুদ্ধাবস্থা কাটিয়ে উঠতে কোরিয়ার কমপক্ষে একশ বছর সময় লাগবে। কিন্তু তারা মাত্র ৫০ বছরে তা কাটিয়ে উঠেছে। সুতরাং তাদের অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগাতে পারি।

মন্ত্রী বলেন, কোরিয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা মাত্র ৫০ বছরে তাদের জাতীয় আয় চারশ গুণ এবং জিডিপি সাতশ গুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। তারা মাথাপিছু আয় ২০ হাজার ডলার এবং বর্তমান জিডিপি ৮শ বিলিয়ন ডলার।

বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের দশম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার এ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে স্বায়ত্বশাসন ও দক্ষতা বৃদ্ধি, বিশ্বাসযোগ্য ও সময়োপযোগী তথ্য সরবরাহ, পরিচালনা ও মূল্যায়নে পর্যাপ্ত দক্ষতা এবং রাজনৈতিক ইচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিনিয়তই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ থেকে ৩৪৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। যেখানে ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ পরিমাণ ছিল ২৫০ মিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে জিএসপি’র আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও রুলস অব অরিজিনের (আরওও) কঠোরতার কারণে এর পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
এক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারকে আরওও-এর শর্ত শিথিল করার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

সংলাপে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি উন-ইয়ং, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।