ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবরোধে পর্যটকদের ভ্রমণ বাতিল, লোকসানে ব্যবসায়ীরা

আবু খালিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫
অবরোধে পর্যটকদের ভ্রমণ বাতিল, লোকসানে ব্যবসায়ীরা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: চলতি মাসে এ পর্যন্ত ট্যুর অপারেটর মার্কেট এন ট্রেন্স লিমিটেডের সাড়ে পাঁচ হাজার পর্যটক বাংলাদেশ ভ্রমণ বাতিল করেছেন। আর গত পাঁচদিনে ভ্রমণ বাতিল করেছেন দ্য বেঙ্গল ট্যুর লিমিটেডের অর্ধশতাধিক পর্যটক।


 
এ দুই প্রতিষ্ঠানের মতো দেশের শতাধিক ট্যুর অপারেটরেরা তাদের পর্যটক হারাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
 
২০ দলের ডাকা চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচির কারণে এ ভ্রমণ বাতিলের নোটিশ পাচ্ছেন দেশের ট্যুর অপারেটরেরা। এমনকি বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে ভ্রমণ করা থেকে নাগরিকদের ‘সতর্ক’ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
 
রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটকরা বিমুখ হওয়ায় ধুলিসাৎ হচ্ছে ট্যুর অপারেটরদের কয়েক বছরের পরিশ্রম আর স্বপ্ন। ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।
 
এ বিষয়ে মার্কেট এন ট্রেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থপনা পরিচালক সৈয়দ সাফাত উদ্দিন তমাল বাংলানিউজকে বলেন, তিন বছর ধরে যোগাযোগ করে বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমণের বুকিং পেয়েছিলাম। তবে দেশের এ সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে পর্যটকরা ভীত হয়ে ভ্রমণ বাতিল করছেন। ভ্রমণ বাতিল হওয়ায় এ পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকারও বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে।
 
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পরিচালক তৌফিক রহমান বাংলানিউজকে জানান, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান থেকে বাংলাদেশে অধিকাংশ পর্যটক আসেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ ‘নিরাপদ নয়’ বলে উল্লেখ করেছে, যা দেশের পর্যটন খাতের জন্য অশনি সংকেত।
 
তৌফিক বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত অবরোধ চললে প্রায় ১০০ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের।
 
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান অপরুপ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দেশে পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শীতের শেষ সময়টি এ শিল্পের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক এই মুহূর্তে এ অস্থিতিশীল পরিবেশ শিল্পকে পেছনে ঠেলে দিতে পারে।
 
বিপিসি সংশ্লিষ্টরাও জানালেন পর্যটন শিল্পের নাজুক অবস্থা আর স্থবিরতার কথা।
 
বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের নভেম্বরে এখাত থেকে আয় হয়েছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা, ডিসেম্বরে সাড়ে ছয় কোটি। ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আয় হয়েছে প্রায় চার কোটি টাকা। অবরোধ আর হরতালের ফাঁদে না পড়লে এ মাসে আয়ের পরিমাণ দাঁড়াতো প্রায় সাত কোটি টাকায়।
 
টোয়াব পরিচালক ও দ্য বেঙ্গল ট্যুর লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটন খাতে ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে হোটেল, এয়ারলাইন্স, গাইড, পরিবহনসহ সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
 
তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন খাতে বড় ধরনের ক্ষতির পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সঙ্কটের মুখে পড়ে যাবে। শুধু চলতি মৌসুমেই নয়, আগামী কয়েক বছরেও এর প্রভাব থাকবে।
 
রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না থেকেও সবচেয়ে বড় খেসারত দিতে হচ্ছে ট্যুর ব্যবসায়ীদের। তবে কেন তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
 
গত ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে ২০ দলীয় জোটকে রাজধানীতে সমাবেশ করতে না দেওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেন।
 
** পর্যটক শূন্য খাগড়াছড়ি!

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।